অরক্ষিত বেড়িবাঁধ, ঝুঁকিতে ৩০ হাজার মানুষ


পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়ায় ৩০ হাজার মানুষ চরম ঝুঁকিতে দিন কাটাছে। এতে যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাড়তে পারে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে লবণ ও চিংড়ি উৎপাদন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ গত দুই বছর আগে ইউনিয়নের ৮ কিলোমিটারের এ বেড়িবাঁধ সংস্কারকাজ শুরু করেছিল উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাড়ে ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের সংস্কারকাজ সম্পন্ন করলেও বাকি আড়াই কিলোমিটার রয়ে গেছে অরক্ষিত। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির এমন ভূমিকায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে শত কোটি টাকার সরকারি এ উন্নয়ন প্রকল্প।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহেদুল ইসলাম, মোজাহিদুল ইসলাম, আলী আকবর ও জয়নাল আবদীন বলেন, বেড়িবাঁধটির সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করতে তাগিদ দিয়ে আসছিল সবাই। কিন্তু ঠিকাদারের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ায় ধীরগতিতে সংস্কারকাজটি করছে। তাই কার্যাদেশ শেষ হয়ে গেলেও সংস্কার কাজ থেকে গেছে অসম্পূর্ণ। কিছুদিন আগে বেড়িবাঁধ সংস্কারকাজে নিয়োজিত যন্ত্রাদি ও এস্কেলেটর সরিয়ে নিয়েছে ঠিকাদার। এতে আগামী বর্ষার মগনামার লোকজন আবারো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে কাঁকপাড়া ও শরৎঘোনা পয়েন্টের সংস্কারকাজটি শেষ করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এদিকে একই দাবীতে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম। শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য শাহেদুল ইসলামসহ পেকুয়ায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান ওয়াসিম বলেন, ঘুর্ণিঝড় রোয়ানু ও আইলার আঘাতে এমনিতে মগনামার মানুষ অসহায় জীবন যাপন করছে। ক্ষতবিক্ষত রয়েছে গ্রামীণ অবকাঠামো ও হাজারো মানুষের ঘর বাড়ি। দূর্যোগের পর সরকার মগনামা ইউনিয়নে অন্তত ৮ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছে। এখন ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে বর্ষায় পানি ঢুকলে এসব উন্নয়ন কাজ ভেস্তে যাওয়ার পাশাপাশি কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে এলাকাবাসীর।

তিনি আরো বলেন, মগনামা ইউনিয়নে ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। পুরো ইউনিয়নে আট কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। বেড়িবাঁধের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সংস্কার করা হলেও আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এখনও অরক্ষিত রয়ে গেছে। একমাস পরই বর্ষা শুরু হবে। এই অরক্ষিত বেড়িবাঁধ নিয়ে মগনামাবাসীর মাঝে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঠিকাদারের অর্থ সংকটের অজুহাতে বেড়িবাঁধটি সম্পূর্ন সংস্কার না করায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন উজানটিয়ায়ও এর প্রভাব পড়বে। তাই তিনি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের আসন্ন প্লাবন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় সাংসদ ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন