Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি: হুমকিতে পাহাড়

তৎপর তিন উপজাতি গ্রুপের ১৮ শত সশস্ত্র সন্ত্রাসী

পাহাড়ে সন্ত্রাস

মমিনুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফিরে:

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর। রক্তাক্ত জনপদ পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে স্বাক্ষরিত হয় ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি’। ইতোমধ্যে ১৯ বছর পার করেছে এ চুক্তি। অথচ এখনও অশান্তির আগুনে জ্বলছে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির মানুষ। প্রতিনিয়তই এখানে উপজাতি সন্ত্রাসীদের খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন কেউ না কেউ।

গোয়েন্দা তথ্য মতে, উপজাতিদের আঞ্চলিক তিন গ্রুপের প্রায় ১৮ শ সশস্ত্র সন্ত্রাসী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম। শুধু বাঙালি ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নয়, স্বগোষ্ঠীর সন্ত্রাসীদের হাতে অত্যাচারিত, নিপীড়িত এবং ভয়ঙ্কর প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন ১৩টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনও।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দুর্গম পাহাড়ের অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে অবাধে প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে ঢুকছে অত্যাধুনিক সব মরণাস্ত্র। দিন দিন এভাবে আঞ্চলিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো অবৈধ অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলছে। অন্যদিকে, চুক্তি পরবর্তী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তেমন কোনো অভিযানও পরিচালনা করা হয়নি। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এক দশমাংস ভূখণ্ড। এ অবস্থা থেকে উত্তরনে অবিলম্বে পাহাড়ে অস্ত্র উদ্ধারে চিরুনি অভিযান চালানোর জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পাহাড়ের আঞ্চলিক তিনটি গ্রুপ হলো- জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-সন্তু), জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থি ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। কোথাও কোথাও জেএসএস আবার কোথাও ইউপিডিএফের আধিপত্য পুরো পাহাড়ে।

পাহাড়ের কথিত এসব সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা রমরমা অস্ত্রের ব্যবসার পাশাপাশি তা সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করছে। মাঝে মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হলেও শান্তি চুক্তির পর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পাহাড়ে কোনো চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সম্প্রতি এমন সব অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে যা কিনা নেই নিরাপত্তা বাহিনীর হাতেই।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এই তিন গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পোশাক ব্যবহার করে থাকে। ১৮ শ সন্ত্রাসীর মধ্যে জেএসএস (সন্তু) গ্রুপের রয়েছে প্রায় ৯ শ সশস্ত্র সন্ত্রাসী। তাদের অধীনে রয়েছে সামরিক কায়দায় ৬টি কোম্পানি।

জেএসএস (সংস্কার) এর রয়েছে ২টি কোম্পানি। তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসীর সংখ্যা প্রায় পৌনে ৩ শ। আর ইউপিডিএফের ৪টি কোম্পানির অধীনে রয়েছে প্রায় ৭ শ সশস্ত্র সদস্য। ক্যাপ্টেন বা মেজর পদবির সদস্যরা কোম্পানিগুলোর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। সামরিক শাখার এসব সদস্য দল থেকে প্রতি মাসে নিয়মিত বেতনও পান। এমনকি ঝুঁকি ও অবসর ভাতাও পান তারা।

অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি: হুমকিতে পাহাড়
এদের টার্গেট পাহাড়কে বিচ্ছিন্ন করে তথাকথিত ‘জুম্মল্যান্ড’ প্রতিষ্ঠা বা স্বায়ত্তশাসিত সরকার গঠন। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সংগ্রহ করছে। আর অস্ত্র কেনা ও নিজেদের সংগঠন চালানোর জন্য তারা চাঁদা আদায় করছে সাধারণ মানুষ, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। ফলে জিম্মি হয়ে পড়েছে তিন পার্বত্য জেলার সাধারণ মানুষ। প্রাণ ভয়ে তারা কেউই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যান না।

গোয়েন্দারা জানান, দুই উপায়ে সশস্ত্র সদস্যরা তাদের দল ভারি করার চেষ্টা করেন। প্রথমত তারা পার্বত্য অঞ্চলে খোঁজ করেন কোন কোন উপজাতির নামে মামলা রয়েছে অথবা অপরাধের দায়ে কাদের পুলিশ খুঁজছে। তাদের তালিকা তৈরি করে নানা প্রলোভন দেখিয়ে দলে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালানো হয়। আবার কিছু উপজাতিকে স্বাধীন পার্বত্য অঞ্চল অথবা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা জুগিয়ে প্রশিক্ষণসহ হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়।

সম্প্রতি উদ্ভাস চাকমা ও রাজু চাকমা নামে দুইজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে তারা পুলিশের কাছে নিজেদের সংগঠন ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়।

উদ্ভাস চাকমা ও রাজু চাকমা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তাদের রয়েছে নিজস্ব সেনাপ্রধান, আলাদা আলাদা কোম্পানি, বিভিন্ন উইং, শরীরে থাকে বাহিনীর পোশাক, হাতে অত্যাধুনিক ওয়াকিটকি, কাঁধে চকচকে ভারি ও দামি অস্ত্র। তারা প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণ পাওয়া দক্ষ ও ক্ষিপ্র।

শুধু পোশাক আর অস্ত্র নয়, তাদের রয়েছে নিজস্ব পরিচয়পত্র, মুদ্রা ও পতাকা। পাহাড়ে জুম্মল্যান্ড ও স্বায়ত্তশাসিত সরকার গঠনকে টার্গেট করে নীরবে সশস্ত্র কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছে তারা। এসব সংগঠন ফেসবুক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের পতাকা, মুদ্রা ও পরিচয়পত্রের প্রচার চালাচ্ছে।

সরেজমিনে স্থানীয় লোকজন ও গোয়েন্দা সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে বিভিন্ন সময় বিদেশি অত্যাধুনিক মরণাস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে এম কে-১১, জার্মানির তৈরি এইচ কে-৩৩, রাশিয়ার জি-৩, একে-৪৭, একে-২২, এম-১৬ রাইফেল, নাইন এমএম পিস্তল, চাইনিজ সাব মেশিনগান, এসবিবিএল বন্দুক।

এসব অস্ত্র মানের দিক দিয়ে যেমন অত্যাধুনিক তেমনি দামের দিক দিয়েও ব্যয়বহুল। এম কে-১১ এর মতো অত্যাধুনিক রাইফেল দিয়ে প্রায় এক মাইল দূর থেকেও নিশানা করা যায়। এর কার্যকর রেঞ্জ এক হাজার ৫ শ গজ। প্রতি মিনিটে ফায়ার করা যায় ৭৫০ রাউন্ড। একটি নতুন এম কে রাইফেলের দাম প্রায় ৮ লাখ টাকা।

স্থানীয় গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পাহাড়িদের হাত ঘুরে এসব অস্ত্র এখন পৌঁছে যাচ্ছে দেশে সক্রিয় বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের হাতে। ব্যবহার হচ্ছে দেশবিরোধী সন্ত্রাসী কাজে। আটক জঙ্গিরা পাহাড় থেকে অস্ত্র সংগ্রহের বিষয়টি এরই মধ্যে স্বীকার করেছে। জঙ্গিদের কাছ থেকে এ ধরনের তথ্য পাওয়ার পর তিন পার্বত্য জেলায় পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্গম এলাকার সুযোগ নিয়ে পাহাড়ে সক্রিয় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র কেনাবেচার রুট হিসেবে ব্যবহার করছে পার্বত্য জেলাগুলোকে। অন্যদিকে, জঙ্গিরাও এ অঞ্চল থেকে অস্ত্র সংগ্রহকে নিরাপদ হিসেবে মনে করছে। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলছে তারা। বিষয়টিকে রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গোয়েন্দাদের তালিকায় তিন পার্বত্য জেলায় অস্ত্র কেনাবেচায় সম্পৃক্ত থাকা ১৫টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের নাম রয়েছে।

এদিকে, তিন পার্বত্য জেলার বেশ কয়েকটি স্থানকে অস্ত্র আসার রুট হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এসব স্থানের মধ্যে রয়েছে-বান্দরবানের থানচি ও নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী এলাকা, রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার চোট হরিণা, বড় হরিণা, বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক, জুরাছড়ির আন্দারমানিক, ফকিরাছড়ি, বিলাইছড়ি, খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার নারাইছড়ি, পানছড়ির দুদকছড়ি, কেদারাছড়া, মাটিরাঙা উপজেলার আচালং, রামগড় উপজেলার বাগানবাজার, বড়বিল, রামগড় বাজার ইত্যাদি। এসব স্থান রুট হিসেবে ব্যবহারের অন্যতম কারণ হিসেবে অরক্ষিত সীমান্তকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি: হুমকিতে পাহাড়তারা জানান, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে ২৮১ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তের এরই মধ্যে ১৩০ কিলোমিটার সুরক্ষিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, মিয়ানমারের সঙ্গে থাকা ১৯৮ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তের মধ্যে ৮৫ কিলোমিটার সুরক্ষিত করা হয়েছে। তারা জানান, সীমান্ত সুরক্ষিত করার অংশ হিসেবে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হচ্ছে চেকপোস্ট।

খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মজিদ যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাবর্ত্য এলাকা দুর্গম এবং সন্ত্রাসীরা এসব এলাকায় সশস্ত্র অবস্থায় থাকে। মাঝে মাঝে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয় এবং ধরাও পড়ে। ইউপিডিএফ এর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ধরেছি। সন্ত্রাসীদের হাতে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র আসতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি।

রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) সাঈদ তরিকুল হাসান বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের ধরতে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকাশ ও উন্নত প্রযুক্তির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট থাকলে সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে বলে তিনি মনে করেন।

পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, পার্বত্য অঞ্চল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না করলে জনজীবন স্বাভাবিক হবে না এবং জনগণ তার ভোটাধিকারও পাবে না। এমন কোনো ভারী অস্ত্র নেই যা তাদের না আছে।

চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে চিনু বলেন, যার কাছে অস্ত্র পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেফতার করতে হবে। শান্তি চুক্তির সময় জনসংহতি সমিতি অস্ত্র জমা দিয়েছে। তাদের কাছে যদি এখন কোনো অস্ত্র না থাকে তাহলে তারা চিরুনি অভিযানে সহযোগিতা করতে পারে। পাহাড়ের এ সন্ত্রাসীরা একমাত্র সেনাবাহিনীকে ভয় পায় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সাবেক পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার বলেন, জেএসএস-ইউপিডিএফ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। পাহাড়ে মূল সমস্যা অবৈধ অস্ত্র। এসব অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।

এদিকে, কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে জেএসএস। দলটির সহ-প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমার বক্তব্য হলো, জেএসএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করি। তবে এখানে মূল সমস্যা হচ্ছে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না করা। ভূমি সমস্যার সমাধানসহ চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে তিনি মনে করেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন সময় উদ্ধার হওয়া অস্ত্র:

গত ২ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে অবৈধ অস্ত্রসহ আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় তার কাছ থেকে ১টি ম্যাগজিন ৫ রাউন্ড তাজা গুলিসহ আমেরিকার তৈরি ১ ফাইভ স্টার পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

গত ৯ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি এলজি উদ্ধার করে। ২৭ অক্টোবর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন পাহাড়ে অবস্থানকারী সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের অপহরণ কাজে ব্যবহৃত ৪টি অস্ত্র উদ্ধার করে বিজিবি।

গত অক্টোবরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় চাইনিজ সাব মেশিনগান ও জি-৩ রাইফেল, ৩৮ রাউন্ড গুলিসহ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি আরো একটি এম-১৬ রাইফেল উদ্ধার করা হয়।

২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচারের সময় ভারতের মিজোরাম রাজ্যের দুটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে আসাম রাইফেলস। এসব অস্ত্রের মধ্যে ছিল ১২টি ম্যাগাজিনসহ পাঁচটি একে-৪৭ ও তিনটি একে-৫৬ রাইফেল। এর আগে ২০১৪ সালের মার্চে মিজোরাম পুলিশ বাংলাদেশগামী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে।

একই বছরের আগস্টে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বরাদম এলাকায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৫ সন্ত্রাসী নিহত হয়। এ সময় মেশিনগান, সাব মেশিনগান, চাইনিজ রাইফেল, এসএলআরসহ মোট ৮ আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৩৯ রাউন্ড বিভিন্ন অস্ত্রের গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ গুলি ও সামরিক পোশাক ও সামরিক সরঞ্জাম আটক করে।

সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রের কারণে কিছু দিন আগেই অবিলম্বে রাঙামাটিসহ পার্বত্য এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু করা না হলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একযোগে পদত্যাগ করে পদত্যাগপত্র সভানেত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। পাহাড়ে কোনো অস্ত্রবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর। তিনি পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জারালো অভিযান চালানোরও আহ্বান জানান।

সূত্র: যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন