ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাল্টা-পাল্টি অপহরণ আতঙ্কে ভুগছে নানিয়ারচরবাসী

 

অপহরণ

নিজস্ব প্রতিনিধি : রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় তিন দিনের ব্যবধানে পৃথক দুটি ঘটনায় স্থানীয় অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হাতে অপহরণের শিকার হয়েছেন চারজন। আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্রকরে সৃষ্ট বিরোধের কারণেই এসব পাল্টাপাল্টি অপহরণের ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।  ফলে একের পর এক অপহরণের ঘটনার আরও বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন উপজেলাবাসী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৬ মার্চ বুধবার সকালে নানিয়ারচর উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাপমারা এলাকা থেকে মেম্বার প্রভাত চাকমা, সুজন কার্বারী ও প্রিয়লাল চাকমাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে দূর্বত্তরা। এ ঘটনার তিন দিন আগে ১৩ মার্চ রোববার  রাতে একই এলাকা থেকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যার পঞ্চানন চাকমাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা।

বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমোদ খীসা অপহরণের সত্যতা নিশ্চিত করলেও কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত সেই বিষয়ে চেয়ারম্যান কিছুই জানাতে পারেননি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৩ মার্চ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন চাকমা সাপমারা এলাকার স্থানীয় মেম্বার প্রভাত চাকমার বাড়িতে নিমন্ত্রণে গেলে সেখান থেকে মুঠোফোনে তাকে ডেকে নিয়ে যান প্রিয়লাল চাকমা। পরে প্রিয়লালের ফোনে পঞ্চাননের স্ত্রী ফোন করলে প্রিয়লাল তাকে জানান পঞ্চানন তার সাথে রয়েছে এবং নিমন্ত্রণ খাওয়া শেষে বোটে করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে পঞ্চাননকে। এরপর থেকে পঞ্চানন চাকমা আর বাসায় ফেরেননি।

এই ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বুধবার সকালে সাপমারা এলাকা থেকে সুজন কার্বারী, মেম্বার প্রভাত চাকমা ও আঞ্চলিক দলের যুবনেতা প্রিয়লাল চাকমাকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তদের অপর একটি গ্রুপ।

স্থানীয়দের ধারণা, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জেএসএস (এমএন লারমা)র হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা করার ঘোষণার পর থেকেই পঞ্চাননকে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলো স্থানীয় অপর একটি দল। তারপরও পঞ্চানন তার অবস্থান থেকে সরে না আসায় তাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এই ঘটনাটি ঘরোয়াভাবে সমাধানের চেষ্টা চালানোর পরও পঞ্চাননকে মুক্তি না দেওয়ায় তার সমর্থকরা পঞ্চাননকে অপহরণের প্রতিশোধ হিসেবেই ১৬ মার্চ বুধবার সকালে পাল্টা অপহরণের ঘটনাটি ঘটায়।

উভয় ঘটনায় কোনো পক্ষই থানা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ করেনি বলে নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

এসব অপহরণ-পাল্টা অপহরণের ঘটনার দ্রুত সমাধান না হলে নানিয়ারচর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনগণ। তাই তারা সকল পক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ার প্রতীক্ষা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন