১৮ ঘন্টা পর আহত অবস্থায় চকরিয়া থেকে উদ্ধার অপহৃত স্কুল ছাত্র

পেকুয়া প্রতিনিধি:

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সিলং এ অবস্থানরত সালাহউদ্দিন আহমদের পেকুয়ার মাতবর পাড়াস্থ গ্রামের বাড়ির কেয়ারটেকার আবদুর রশিদের স্কুল পড়ুয়া ছেলে পেকুয়া থেকে অপহৃত হয়ে অবশেষে ১৮ ঘন্টা পর আহত অবস্থায় চকরিয়া থেকে উদ্ধার হয়েছে বলে জানাগেছে।

অপহৃত স্কুল ছাত্রের নাম মাঈনুদ্দীন (১৬)। সে পেকুয়া জিএমসি ইনস্টিটিউশনের ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। ৪ ডিসেম্বর চকরিয়া উপজেলর বিএমচর ইউনিয়নের বহদ্দারকাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অপহৃত মাঈনুদ্দীনের পিতা কেয়ারটেকার আবদুর রশিদ জানান, আমার ছেলে মাঈনুদ্দীন পড়ালেখার খরচ জোগাতে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন বিয়ে বাড়িতে স্টেজ সাঁজানোর কাজ করে আয় করে থাকে। ঘটনার দিন সকাল ১০টার দিকে তাকে একটি নাম্বার থেকে ফোন করে চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের স্টেশন এলাকায় একটি বিয়ে বাড়িতে স্টেজ সাঁজানোর কথা বলে তাকে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে। পরে বহদ্দারকাটা এলাকার একটি পাহাড়ি এলাকায় আটকে রেখে তাকে ব্যাপক মারধর করে এবং তাকে দিয়ে আমাকে ফোন করায়।

এসময় আমার ছেলে ফোনে জানায়, তাকে একদল অস্ত্রধারী লোক মহেশখালী কালারমারছড়ার একটি পাহাড়ি এলাকায় তাকে আটকে রেখে মারধর করছে।

রশিদ জানান, এসময় অপহরণকারীরা আমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে আমি গরীব মানুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তারা একটি বিকাশ নাম্বার দিয়ে তাতে আধাঘন্টার মধ্যে টাকা না দিলে আমার ছেলেকে মেরে ফেলবে বলে বারবার হুমকি দিতে থাকলে আমি তাদের ওই নাম্বারে ১৫ হাজার টাকা দেই।

পরে পেকুয়া থানার আশ্রয় নিলে পেকুয়া থানা পুলিশের সহায়তায় মোবাইল ট্রেকিং এর মাধ্যমে তাদের অবস্থান চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের বহদ্দারকাটা বলে নিশ্চিত হলে বহদ্দারকাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশসহ রাত আনুমানিক ৩টার দিকে অপহরণকারীদের ধরতে অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা আমার ছেলেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পেকুয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করাই। তিনি জানান, এব্যাপারে (৫ ডিসেম্বর) চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

এ বিষয়ে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বখতিয়ার উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘অপহরণ যদি পেকুয়া থেকে হয় তাহলে পেকুয়া থানায় তাদেরকে অভিযোগ করতে হবে। আমার এখান থেকে উদ্ধার হলেও মামলাটা হবে পেকুয়ায়। আপনি পেকুয়া থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করুন।’ পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনজুরুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভিকটিমের পিতার মৌখিক অভিযোগ পেয়ে পেকুয়া থানার ডিউটি অফিসার এস আই শিমুল বিশ্বাসকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। পরে ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানার এসআই শিমুল বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাতে অভিযোগ পেয়ে আমরা চকরিয়া উপজেলার বিএমচর বহদ্দার কাটা এলাকায় অভিযান চালাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেরে অপহরণকারীরা ভিকটিমকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া হাসপাতালে নিয়ে আসি। তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন আহমদের বাড়ির কেয়ারটেকার আবদুর রশিদের স্কুল পড়ুয়া ছেলে মঈনুদ্দীনকে ওরা ফুলের অর্ডার দেয়ার জন্য ডেকে নিয়ে কৌশলে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন