শিক্ষা অফিসের কারণ দর্শানোর নোটিশ: হাজিরা খাতায় শিক্ষকের অগ্রিম স্বাক্ষর’র অভিযোগ

আলীকদম প্রতিনিধি:

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে হাজিরা খাতায় অগ্রিম স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারি। নিয়মিত বিদ্যালয় মনিটরিং এর অভাবে শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে না গিয়েই বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি উপজেলা শিক্ষা অভিযোগের একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং দুদকে পাঠানো অভিযোগ থেকে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গেছে।

অনুসন্ধানে প্রকাশ, উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের থোয়াইচিং হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় পরের দিন ২৮ ফেব্রুয়ারির অগ্রিম স্বাক্ষর করেন। জানা গেছে, এ শিক্ষক নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌতুকের দায়ে স্ত্রী নির্যাতনের পৃথক দুইটি মামলার আসামি। এজাহারভূক্ত আসামি হওয়ায় তিনি পুলিশের নিকট ধরা পড়ার আশঙ্কা প্রায়সময় হাজিরা খাতায় অগ্রিম স্বাক্ষর দিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযুক্ত শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ এর ৪ ধারায় এবং সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিমালা- ১৯৭৯ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।

স্থানীয় অভিরাম ত্রিপুরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার চৈক্ষ্যং ত্রিপুরা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম নিয়মিত বিদ্যালয়ে যান না। কিন্তু কয়েকদিন পরপর বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা তুলে নেন। সম্প্রতি বিদ্যালয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানকালে গত ২৯ জানুয়ারি বেলা ১১টায় অফিসকক্ষে দুইজন সহকারী শিক্ষককে পাওয়া গেলেও বিদ্যালয়টিতে একজন শিক্ষার্থীকেও পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি রুংজোমা ত্রিপুরা বলেন, ‘কেন স্কুল বন্ধ আমি জানি না, প্রায় সময় শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে না আসায় শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়েছে’।

অপরদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার তিন শিক্ষক বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে পাথর ব্যবসায় জড়িত হওয়ার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ হয়। এ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চ্যানেল আইসহ কয়েকটি মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হয়। অভিযুক্ত শিক্ষকরা হচ্ছেন মিনহাজ উদ্দিন রোকন, আব্দুল বাতেন ও নুরুল আজিম।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন রোকন বলেন, আমি ভাইয়ের মাধ্যমে পাথর ব্যবসায় কিছুটা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু আর্থিক লেনদেনটা আমি সরাসরি করে থাকি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন