parbattanews

লামার পোপা মৌজায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা শতাধিক পরিবারকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে

লামা প্রতিনিধি:

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার লামা সদর ইউনিয়নের পোপা মৌজার বিভিন্ন পাড়া থেকে শতাধিক পরিবারের লোকজনকে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাড়ি ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিনভর নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেক পাহাড়ি-বাঙ্গালি নারী পুরুষ বাড়িঘর ফেলে বলিয়ারচর ও লামা বাজারে আশ্রয় নিয়েছে। পোপা মৌজার গিলা পাড়ায় ও পোপা হেডম্যান পাড়ায় বর্তমানে শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী অবস্থান করছে বলে স্থানীয় অধিবাসীরা জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে লামা ইউনিয়নের নকশারঝিরি এলাকায় যৌথ বাহিনীর সাথে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ৪০ জনের সন্ত্রাসী গ্রুপটি মঙ্গলবার যৌথ বাহিনীর সাথে গোলাগুলির পর পোপা হেডম্যান পাড়ার দিকে গমন করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

বুধবার সারাদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে আরো সশস্ত্র সন্ত্রাসী পোপা মৌজায় ৪০জনের এই সন্ত্রাসী গ্রুপের সাথে জড়ো হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

নকশারঝিরি এলাকার অধিবাসী মোর্শেদা বেগম জানান, ছয় সন্তান নিয়ে আতঙ্কে আছি। নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাড়ি ঘর ছেড়ে বলিয়ারচরে আশ্রয় নিয়েছি। অপর অধিবাসী মনোয়ারা বেগম জানান, বাড়ি ঘরে অবস্থান করার মত নিরাপত্তা আমাদের নেই। পুরো এলাকার অধিবাসীরা দলে দলে উপজেলা সদরের কাছাকাছি অবস্থানের জন্য বাড়ি ঘর ফেলে চলে আসছে।

লামা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা গত ১মাস যাবৎ বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ বাড়িঘরে অবস্থান করতে পারছে না। অস্ত্রধারী এই সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে যাচ্ছে। তারা জলপাই রঙ্গের পোশাক পড়া এবং তাদের নিকট ভারী অস্ত্র রয়েছে।

মঙ্গলবার ছোট বমু ও মেরাখোলাসহ লামা ইউনিয়নের কয়েকটি পাড়ায় এই সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজীসহ তাণ্ডব চালিয়েছে। সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না। প্রতি পরিবারকে ১ হাজার টাকা এবং প্রতি মুদি দোকানদার ৩ হাজার টাকা চাঁদা বাৎসরিক সন্ত্রাসীদেরকে প্রদান করতে হবে মর্মে তারা আলটিমেটাম দিয়েছে। অনেক ত্রিপুরা ও ম্রো পরিবার দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে সন্ত্রাসীদের ভয়ে লামা বাজারে অবস্থান করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে চাকমা, মার্মা ও ত্রিপুরা যুবক রয়েছে। তারা সকলে ভারী অস্ত্র বহন করছে।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির খবর পেয়ে পুলিশসহ যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় যৌথ বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

Exit mobile version