parbattanews

লামার দুর্গমে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি বৃদ্ধি

লামা প্রতিনিধি:

লামা উপজেলার দুর্গম জনবসতি এলাকাগুলোতে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনভাবেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না হওয়ায় স্থানীয় অধিবাসীগণ জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

সোমবার (২৭ আগস্ট) উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সেনাবাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ।

আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, বাথোয়াইচিং মার্মা, মিন্টু কুমার সেন ও ছাচিং প্রু মার্মা জানান, সরই, গজালিয়া, লামা ও রূপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা গুলোতে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কয়েকটি দল সশস্ত্রভাবে অবস্থান করছে। তাদের নিকট ভারী অস্ত্র রয়েছে। তারা সাধারণ মানুষের ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষের বাড়ি ঘরে গিয়ে নির্ধারিত হারে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা দিতে অপারগ ব্যক্তিদের মারধর করছে।

সাধারণ মানুষ কৃষিপন্যসহ কোন ধরণের ব্যবসা বানিজ্য করতে পারছে না। পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা গত ৭ আগস্ট লামা সদর ইউনিয়নের বইল্যারচর এলাকায় মানুষের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়েছে। বইল্যারচরের সাবেক ইউপি মেম্বার রবিউল হোসেনের বাড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীগণ হামলা চালিয়ে তছনচ করেছে।

সাধারণ মানুষ থেকে তারা হাঁট বাজার কেড়ে নিচ্ছে। সন্ত্রাসীরা পোপা ও লুলাইং মৌজায় সার্বক্ষনিক অবস্থান করছে। সুযোগ পেলেই আক্রমণ করে। দুর্গম এলাকার শতাধিক পরিবার বর্তমানে সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ি ঘর ফেলে লামা সদরে অবস্থান করছে। লোহাগাড়ার ইউপি মেম্বার মোজাফ্ফর আহম্মদকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা সরই এলাকাতে অপহরণ ও জিম্মি করে চাঁদা আদায় করেছে। পোপা, লুলাইং, লেমু পালং ও নাইক্ষ্যং মৌজায় পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছে। গজালিয়া ও লামা ইউনিয়নের স্থানীয় কিছু পাহাড়ী যুবক পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে।

পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনসাধারণকে চাঁদা প্রদান করার জন্য চিঠি দিয়েছে। চাঁদা দিতে অক্ষম লোকজনকে মারধর করে আহত করা হচ্ছে। পুরো এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা আতঙ্কগ্রস্থ করে তুলেছে। লামা বাজারের বিভিন্ন হোটেলে এবং আবাসিক মেসে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা আত্মীয়তার পরিচয় দিয়ে উপজেলা সদরে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। পালি টোল ও বৌদ্ধ কেয়াংগুলো পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।

মেরাখোলা মার্মা পাড়ায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা প্রায় সময় অবস্থান করে বলে জানা গেছে। আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত সকলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চালু করার দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী জানান, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা শীত মৌসুমকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই মৌসুমে গাছ, বাঁশ, পাথর সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে সারা বছর ব্যবহার করে। সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি কার্যক্রম বন্ধ করা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, সকলে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। সকলে একযোগে কাজ করলে সন্ত্রাসীদের জায়গা হবে না।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, থানা পুলিশের কাছে সব কিছু ছেড়ে দিলে হবে না। অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও আপনারা জানান এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করতে বলুন।

Exit mobile version