লংগদু অগ্নিসংযোগের আসল কারণ: একটি অন্তর্নিহিত অনুসন্ধান


আবু উবায়দা:

রহস্যে ঘেরা পার্বত্য চট্টগ্রাম। সারা দেশে জনগনের ভাবমূর্তি নিয়ে চলছে ইস্যু বদলের রাজনীতি। সারা দেশের রাজনীতির সাথে যদিও পার্বত্য রাজনীতির সাদৃশ্য নেই, তবুও ইস্যুর রাজনীতিতে রহস্যময় পার্বত্য চট্টগ্রামই দেশে প্রথম।

এখানে এক একটি ইস্যু সাধারণ পার্বত্যবাসীর জন্য পারিবারিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি সামাজিক, অর্থনৈতিক বিপর্যয় টেনে আনে। জাগ্রত করে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, সৃষ্টি করে পারস্পরিক অনাস্থা, অবিশ্বাস। সম্প্রতি লংগদু উপজেলার যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন হত্যাকে কেন্দ্র করে উপজেলার দুই শতাধিক উপজাতীয় বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ইস্যুটি দেশের সর্বোচ্চ আলোচিত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। একবার কি চিন্তা করেছেন লংগদু ইস্যুটি কারা এবং কেন তৈরী করেছে?

লংগদু ইস্যুটির রহস্য সম্পর্কে আলোকপাতের পূর্বে আমাদের পর্যালোচনা করা উচিত সম্প্রতি পার্বত্য ঘটনা প্রবাহ সম্পর্কে। গত বিজয় দিবসের আগের রাতে নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট এলাকায় উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা চাঁদা না পাওয়ায় দুই নিরীহ বাঙ্গালী চাষীর প্রায় ৩২ হাজার আনারস কেটে নষ্ট করে। এতে চাষীদ্বয়ের অন্তত ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়ে তারা নিঃস্ব হয়। যেই ঘটনা সারা দেশে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তুলনামূলক আলোড়ন তৈরী করে।

গত ২৩ জানুয়ারী, ২০১৭ তারিখ রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি বাজার ব্যবসায়ীর মালবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। এতে ব্যবসাীর প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতির পাশাপাশি ট্রাক মালিক হারায় তার অবলম্বন। নানিয়ারচরে চাষীদের চাঁদা আদায়ে বাধ্য করতে কষ্টের ফষল নষ্টের পর উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা চেপে বসেছিলো সাধারন ব্যবসায়ীর উপর। উল্লেখিত মালবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারা দেশে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের আসল মুখোশ অনেকটাই উন্মেচিত হয়েছিলো। পুলিশ অগ্নিসংযোগের ঘটনার মূল হোতা উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদা আদায়ের কালেক্টর রোমেল চাকমাকে গ্রেফতার করেছিলো।

গত ১০ এপ্রিল, ২০১৭ মহালছড়ি থেকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক ছাদিকুল যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের তিনদিন পর গত ১৩ এপ্রিল রাতে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলার দূর্গম ঘিলাছড়ি এলাকায় মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় ছাদিকুলের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছাদিকুলকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিলো নিরীহ মোটরসাইকেল চালকদের ভীতি প্রদর্শন করা। কিন্তু সন্ত্রাসীরা ভাবেনি যে ছাদিকুল হত্যার প্রতিবাদ এতো বড় আকার ধারণ করবে। ছাদিকুল হত্যার পর হতে উপজাতীয় সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলনের নতুন মোড় নেয়। দেশের মানুষ পাহাড়ে জেএসএস, ইউপিডিএফ’র কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নতুন করে বিবেচনা করতে শুরু করে।

উল্লেখিত ঘটনা ছাড়াও সম্প্রতি প্রশাসনের হাতে সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস এবং ইউপিডিএফ’এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যপক হারে গ্রেফতার হচ্ছিল। প্রশাসন বেশ কয়েকটি সন্ত্রাস বিরোধী সফল অভিযান পরিচালনা করে।

গত ১৪ নভেম্বর, ২০১৬ খাগড়াছড়ি সদরের পেরাছড়া হতে ইউপিডিএফ’র সামরিক শাখার প্রধান উজ্জল স্মৃতি চাকমাসহ ছয় জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে আটক করে যৌথ বাহিনী।

গত ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭ তারিখে ইউপিডিএফ’র শীর্ষ নেতা প্রদীপন খীসার বাড়িতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে নগদ ৮০ লাখ টাকা এবং চাঁদা আদায়ের রসিদসহ চাঁদার টাকা খরচের হিসাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করে।

গত ১৯ মার্চ, ২০১৭ তারিখে বান্দরবান থেকে চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির টাকা আনয়নকালে জেএসএস’র সামরিক শাখার থার্ড ইন কমান্ড ধন বিকাশ চাকমা নগদ ১২ লাখ টাকাসহ আটক হয়।

গত ৩ এপ্রিল ইউপিডিএফের বাঘাইছড়ি উপজেলার সহকারী পরিচালক সুগত চাকমা আটক হয়। যার বিরুদ্ধে দু’টি খুনের মামলা ছিলো। গত ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রবিরোধী পোস্টার ও চাঁদা আদায়ের রসিদসহ পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পানছড়ি উপজেলা সভাপতি জুয়েল চাকমাকে আটক করে যৌথবাহিনী।

গত ৩ মে রাতে রাঙ্গামাটি – চট্টগ্রাম সড়কে সাপছড়ি এলাকায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা বাসে গণ ডাকাতি চালায়। যে ঘটনার মূল হোতারাও গ্রেফতার হয়। গত ২২ মে নানিয়ারচরে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলাকারী তিন ইউপিডিএফ নেতা গ্রেফতার হয়।

এভাবে চলতি বছরে যৌথবাহিনীর হাতে অবৈধ অস্ত্র সহ উল্লেখিত জেএসএস, ইউপিডিএফ’র বড় বড় নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়। উদ্ধার হয় অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ, চাঁদাবাজির রসিদ, সামরিক পোষাকসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দলিলপত্র।

উল্লেখিত ঘটনায় পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সারাদেশে তাদের ভাবমূর্তি নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে যায়। প্রতিনিয়ত তাদের হাতে সাধারণ পার্বত্যবাসীর অত্যাচার, গুম, খুনের খবর পত্রিকায় উঠে আসছিলো।

দেশের প্রথমসারীর পত্রিকাগুলো উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি নিয়ে বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো। এদিকে প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হচ্ছিল তাদের বড় বড় নেতা কর্মী, হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিল অবৈধ অস্ত্র। এই পরিস্থিতিতে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা তাদের অস্তিত্ব নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে।

এদিকে হঠাৎ যখন সশস্ত্র সন্ত্রাসী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা ও চাঁদা আদায়ের কালেক্টর রোমেল চাকমার মৃত্যু হলো তখন উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা যেন তাদের রক্ষা কবজ খুঁজে পেলো। সন্ত্রাসীরা দেশব্যপী তাদের ভাবমূর্তি রক্ষায় দেশের বামপন্থী ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা শুরু করে দিলো পার্বত্য সেনা বিরোধী আন্দোলন। শুরু হয়েছিলো সন্ত্রাসীদের রক্ষায় রোমেল ইস্যু নিয়ে নাটক। বাম সুশীলদের দ্বারা ভালোই চলছিলো নাটক। কিন্তু, রোমেল ইস্যু উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত ছাদিকুলের রক্তের ভর সইতে পারেনি।

সেনা-বাঙালী বিরোধী অপপ্রচারের মূলমন্ত্রে রচিত রোমেল নাটকের চিতার আগুন ছাদিকুলের রক্তে শুধু নিভেই ক্ষান্ত হয়নি, ছাদিকুলের রক্ত রাঙ্গামাটিতে উপজাতীয় সন্ত্রাস বিরোধী গণ আন্দোলন সৃষ্টি করেছিলো। সেদিন রাঙ্গামাটির মহাসমাবেশে জেএসএস সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত উপজাতীয় নেতা কিনা মোহনের পুত্র বাবু রূপ কুমার চাকমার জ্বালাময়ী ভাষণে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের পিঠ ঠেকে যায় দেয়ালে। শুরু হয় তিন পার্বত্য জেলায় উপজাতীয় সন্ত্রাস বিরোধী প্রবল গণ আন্দোলন। তখন থেকে সন্ত্রাসীরা পরিকল্পনা আটতে থাকে কিভাবে নতুন ইস্যু তৈরী করে আন্দোলনের মোড় বদলাবে?

উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় ইস্যু বদলে যখন ছিলো চিন্তিত তখনই রচিত হলো লংগদু ইস্যুর নাটক।

পরিকল্পনা মাফিক সেদিন সন্ত্রাসীরা সুকৌশলে অপহরণ করেছিলো লংগদু উপজেলার মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়নকে। যাকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে পাহাড় হতে রাস্তায় ছুড়ে ফেলেছিলো। নয়নের মোটরসাইকেল ফেলে দেয়া হলো নদীতে। নয়ন অজ্ঞাত লাশ হিসেবে পত্রিকায় স্থান পেলো। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক নয়নকে চিনিয়ে দিলো।

নয়নের লাশ পুলিশ পেয়েছিলো বেলা প্রায় সাড়ে এগারোটায়। কিন্তু লংগদুবাসী খবর পেয়েছিলো সন্ধ্যায়। সন্ধ্যার পরে নয়ন পরিবার লাশ আনতে ছুটে গেলো খাগড়াছড়ি। রাতে লাশ আনা হলো লংগদু।
সেদির রাতে ছিলো প্রচণ্ড বৃষ্টি। প্রশ্ন হলো, একরাতে কিভাবে এতো বড় অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনা আটলো পার্বত্য বাঙ্গালী?

এদিকে যেহেতু নয়নের লাশ দিয়ে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা পূর্বেই নাটক লিখে রেখেছে সেহেতু সেই পরিকল্পনা মাফিক উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা রাত হতেই লংগদু সদরের নির্দিষ্ট এলাকার বসবাসরত উপজাতিদের সরিয়ে ফেলতে শুরু করে ।

যেহেতু নয়ন ছিলো লংগদু উপজেলার সকলের সুপরিচিত সেহেতু তার জানাজা এবং জানাত্তোর বিক্ষোভ সমাবেশে হাজার হাজার লোক সমবেত হওয়াটা স্বাভাবিক। সম্ভবতঃ এই জন্যই সন্ত্রাসীরা নয়নকে বেছে নিয়েছিলো।

সকালে শুরু হলো লাশ নিয়ে বাইট্টাপাড়া হতে লংগদু গমন এবং বিক্ষোভ মিছিল। মিছিলে ছিলো হাজার হাজার লোকের উপস্থিতি। লাশের মিছিলের উপস্থিতি লংগদু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে বাইট্টাপাড়া মসজিদ পর্যন্ত দীর্ঘ ছিলো।

মিছিলটি যখন অতিক্রম করেছিলো তখন সর্বপ্রথম উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় বাঙ্গালী সাহেব আলীর ঘরে। আগুনের খবর যখন মিছিলে পৌঁছায় তখন মিছিলরত জনতা আতঙ্কিত হয়ে পরে। মিছিলের পেছন হতে যে যার মতো পালাতে শুরু করে।

তখন শুধু একটি সংবাদ আসছিলো যে উপজাতিরা নিজেদের বাড়িতে আগুন দিয়ে মিছিল পণ্ড করছে। এদিকে শুরু হয়ে গেলো অগ্নিসংযোগের নাটক দৃশ্যায়ন। পুড়ে ছাই হলো প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি।

অগ্নিসংযোগের দায়ের তীর পার্বত্য বাঙ্গালীর দিকে- এটাকে আমি পুরোপুরি মিথ্যে বলবো না। আপনারা ধরে নিয়েছেন সেদিন যেহেতু মিছিল করেছে বাঙ্গালী, অগ্নিসংযোগও করেছে বাঙ্গালীরাই। ভিডিও ফুটেজে অগ্নিসংযোগের সময়ে বাঙ্গালীর চিহ্ন না থাকলেও মিছিলে বাঙ্গালীর ছবি রয়েছে, রয়েছে রাস্তায় ছুটে চলা বাঙ্গালীর অস্তিত্ব। এতেই আপনি প্রমাণ করতে চাইছেন বাঙ্গালীরাই অগ্নিসংযোগ করেছে।

এবার আসুন বাস্তব কথায়। নিরীহ নয়ন, ছাদিকুল, শান্ত, বিশাখা চাকমার হত্যাকারীরা হলেন উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী। ওরা প্রতিনিয়ত পাহাড়ের সাধারণ মানুষদের হত্যা করছে। এখন এই হত্যার দায় কি সমস্ত উপজাতির? নাকি উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের?

অবশ্যই এই হত্যার দায় কোন সাধারণ উপজাতির নয়, এটা আমি এবং আপনি সবাই স্বীকার করি। এই হত্যার দায় আমরা সবাই বলি উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের, যাদের বিচার বরাবরই পার্বত্যবাসী চেয়ে আসছে।

লংগদুতে উপজাতীয় বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ইস্যু বদলের নাটক তা আমি ইতোপূর্বেও বলেছি। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কোন বাঙ্গালী যদি সম্পৃক্ত থাকে তবে নিশ্চিত তিনি বা তারা সাধারণ বাঙ্গালী নন। তিনি হচ্ছেন উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের সহায়ক কোন বাঙ্গালী দুষ্টচক্র কিংবা উপজাতীয় সশস্ত্র গ্রুপের বাঙালী সদস্য। যে কিনা উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে এই কাজ করেছে।

সুতরাং উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হত্যাকাণ্ডের দায় যেমন সমস্ত উপজাতির নয়, তেমনি কোন উপজাতীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের দায় সমস্ত পার্বত্য বাঙ্গালীর নয়। এই সমস্ত ঘৃণ্য কাজের দায় পার্বত্য সাম্প্রদায়িক উপজাতীয় গোষ্ঠীর।

এখনে একটি বিষয় উল্লেখ যে, যে সমস্ত বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তারা অধিকাংশই কিন্তু সাধারণ উপজাতি কিংবা দরিদ্র নন। অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অধিকাংশই জেএসএস নেতা এবং সদস্য।

সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় এই এলাকাটি এই জন্যই বেছে নিয়েছেন যেন, কোন ক্রমেই ঘটনার তীর তাদের দিকে না আসে। নিজেদের বাড়িতে নিজেরাই অগ্নিসংযোগ এটা কোন পাগলে বিশ্বাস করবে? কিন্তু, বাস্তবে সেটাই হয়েছে। তবে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে এটা নতুন কিছু নয়। এটা তাদের নিয়মিত আচারিত কর্ম। বাঘাইহাটে, গঙ্গারামমুখে, তাইন্দঙে একই ঘটনা তারা ঘটিয়েছিল। তাদের খুব সমস্যা অবশ্য এতে হয় না। কারণ ছনের টং ঘর পুড়লে তারা টিনের ঘর পায়। সাথে বিপুল পরিমাণ দেশী বিদেশী ত্রাণ।

আরেকটি আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি পুড়ে ছাই হলো, কিন্তু একজন মানুষের গায়ে কোনো আঁচড় পর্যন্ত লাগেনি। রাতারাতি দুই শতাধিক পরিবারের সদস্যরা উধাও হয়ে যাওয়া কি আশ্চর্যজনক নয়?

যাইহোক লংগদু ইস্যুতে শতভাগ সফল উপজাতীয় সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। তারা পাহাড়ে সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে সাম্প্রদায়িকতা, নিয়ন্ত্রণে এনেছে সর্বস্তরের জনগনের সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলনের গতির চাকা, উসকে দিয়েছে কথিত বাম সুশীলদের। উপজাতীয় সন্ত্রাস বিরোধী মনোভাব, প্রশাসনের, রাজনৈতিক দলগুলোর, মিডিয়ার, সুশীল সমাজের, বিদেশী শক্তিগুলোর সহানুভুতি। সারাদেশের মানুষ উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের অপকর্ম ভূলে আবারও সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হচ্ছে।

উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি এখন আর আলোচ্যসূচি নয়। আলোচ্যসূচি পার্বত্য বাঙ্গালী বিরোধী সেন্টিমেন্ট। সুতরাং লংগদু ইস্যু তৈরীর মূল রহস্যই ছিলো পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা। উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা সুপরিকল্পিত ও সফলভাবে এই ইস্যুটি সৃষ্টি ও পরিচালনা করতে পেরেছে।

আবু উবায়দা: অনলাইন এক্টিভিস্ট ও ব্লগার।


মুক্তমতে প্রকাশিত যেকোনো লেখা লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। পার্বত্যনিউজের সম্পাদকীয় নীতি এ ক্যাটাররিতে প্রযোজ্য নয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

2 Replies to “লংগদু অগ্নিসংযোগের আসল কারণ: একটি অন্তর্নিহিত অনুসন্ধান”

  1. #আবু উবায়দা, আপনার আক্কেল, কান্ডজ্ঞান বোধ বলতে কিছুই নেই। আপনি …রের চেয়েও অধম। কবে আক্কেল হবে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন