Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

লংগদুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি:

রাঙামাটির লংগদুতে উপজাতিদের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও কাপেং ফাউন্ডেশন। শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে সংগঠন দুটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা। তিনি বলেন, ‘২ জুন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ২টা পর্যন্ত লংগদু উপজেলা সদরের তিনটিলা এবং পার্শ্ববর্তী মানিকজোড়ছড়া ও বাত্যা পাড়ায় সেটেলার বাঙালিরা জম্মুদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটসহ সংঘবদ্ধ সাম্প্রদায়িক হামলা চালায়। এতে ২৩৬টি বাড়ি ও দোকান সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়, ৮৭টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেজবাহ কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে এখন পর্যন্ত এদেশের জনগণ জাতিতে বাঙালি। বাঙালিরা চাইছে সবাইকে বাঙালি বানাতে। বাস্তবতা হচ্ছে বহুজাতির দেশ বাংলাদেশ। এখানে যে যার মতো করে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিতে চলবে, এটা স্বীকার করতে সমস্যা কোথায়।’

পাকিস্তান যে ভাবে আমাদের উপনিবেশ করতে চেয়ে ছিল আমরাও পার্বত্য চট্রগ্রামকে উপনিবেশ করতে চাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে তিন ধরনের ভূমি মালিকানার কথা বলা হয়েছে। অথচ সেখানে আদিবাসীদের ভূমি মালিকানার কোনও স্বীকৃতি নেই।’

মেজবাহ কামাল বলেন, ‘সরকার কথা দিয়ে ছিল মহালছড়ির ঘটনার পর আর কোন ঘটনা ঘটবে না কিন্তু সেই ঘটনার পুনাবৃত্তি ঘটেছে লংগদুতে। আমি একটি ভিডিও দেখেছি, সেখানে দেখা গিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে লংদুতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হলেও পাহাড়ি, সংখ্যালঘুদের কাছে স্বাধীনতা আসেনি। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা ভালো নেই, রাষ্ট্র ভালো নেই।’

দীপায়ন খীসা বলেন, ‌‌‌‌’লংগদু হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ীরা দীর্ঘ এক মাস পরেও নিজ বাস্তভিটায় ফিরতে পারেনি। এই বর্ষাকালে তারা মানবেতর দিন যাপন করছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জীবন আজ অনিশ্চিত। সরকারের ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ীদের পুনর্বাসনের কোন পরিকল্পনা লক্ষ করা যাচ্ছে না।’

লংগদুতে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত পুর্নবাসনের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘জুম্মদের ঘরবাড়ি অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে জড়িতদের অচিরেই গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। উপজাতি হওয়ার কারণে বৈষম্য হতে হবে এমন রাষ্ট্র আশা করি না। রাষ্ট্র হয়ে গেছে নিষ্ঠুর ও অমানবিক।’

উন্নয়নের কথা বলে, বিশাল বাজেট পাশ হচ্ছে। এ বড় বাজেট লংগদুর ক্ষতিগ্রস্তদের কোন কাজে লাগবে না উল্লেখ করে সঞ্জীব দ্রং বলেন, মো. নাসিমের নেতৃত্বে ১৪ দলের প্রতিনিধিদল লংদুতে গিয়েছিলেন কিন্তু তারা ফিরে এসে কোনও বক্তব্য দেননি। সরকার অপরাধীদের ধরতে কালক্ষেপণ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি অনুসারে প্যাকেজ পরিকল্পনা ঘোষণা করে তাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের নিম্নক্তো দাবি করা হয়-

১। ক্ষতিগ্রস্ত জুম্মদের দাবিনামা অনুসারে অচিরেই প্যাকেজ পরিকল্পনা ঘোষণা পূর্বক ক্ষতিগ্রস্ত জুম্মদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন করতে হবে।

২। জুম্মদের ঘরবাড়ি অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে জড়িত সকল ব্যক্তিদের অচিরেই গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।

৩। ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বই পুস্তক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করে জরুরী ভিক্তিতে তাদের শিক্ষা জীবন সুনিশ্চিত করতে হবে।

৪। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ, দ্রুত ও যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য অবিলম্বে সময়সূচি ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন