রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে বিশ্ব সম্মেলনের ডাক জাতিসংঘের

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় আবারও বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তায় প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে জাতিসংঘের তিন সংস্থা এক সম্মেলন আয়োজনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আগামী ২৩ অক্টোবর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। কুয়েত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন জাতিসংঘের এই প্রয়াসে সংহতি জানিয়ে সম্মেলনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক যুক্ত বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকোক ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আওএম)-এর মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং এমন সম্মেলন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। ওই তিন সংস্থার প্রধান-এর যুক্ত বিবৃতিতে রোহিঙ্গা সঙ্কটকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া সঙ্কট হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা এটাকে বড় একটি জরুরি মানবিক সঙ্কটও বলেছেন।

রাখাইনের সাম্প্রতিক সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৫ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘের মতে, এ অঞ্চলে কয়েক দশকের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি সংখ্যাক ‘শরণার্থীর’ প্রবেশ। তাদের সহায়তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় দাতব্য সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবক, জাতিসংঘ ও এনজিওগুলো কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এই সহায়তাকে যথেষ্ট মনে করছে না জাতিসংঘ। যুক্ত বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা, নিরাপত্তা ও মৌলিক আশ্রয় নিশ্চিতের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, অনেক স্থানে এখনও বিশুদ্ধ পানির সুবিধা নেই। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। এতে আশ্রয়গ্রহণকারী ও স্থানীয়দের উভয়ের জন্য বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

জাতিসংঘ সম্প্রতি প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে। সোমবার এর তিন সংস্থার যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নিশ্চিতে সীমান্ত খুলে দিয়েছে। পালিয়ে আসা মানুষদের জন্য নিশ্চিত করেছে নিরাপত্তা আর আশ্রয়। রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয়দের আর্তি আর উদারতা আমাদের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে গেছে। এবার জেনেভায় মানবাধিকার সমন্বয় সংস্থা (ওসিএইচএ), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও জাতিসংঘের শরণার্থী কমিশন ইউএনএইচসিআর সম্মেলনে বসছে। ওই বৈঠকে বিভিন্ন দেশের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে। ভাগ করে নেবে দায়িত্ব।

সম্মেলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও কুয়েত। তাদের দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সঙ্কট সারা বিশ্বের সরকারগুলোর কাছে দায়িত্ব পালনের সংহতি ও এই দায় ভাগাভাগি করে নেয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি জয়েন্ট রেসপন্স প্লান এরই মধ্যে হাতে নেওয়া হয়েছে।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন