রোহিঙ্গাদের গুলি না করা সেনাদের মেরে ফেলার নির্দেশ!

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার চিত্র নিজ চোখে দেখেছেন তিনি। রোহিঙ্গা নিধনে সেনা কর্মকর্তাদের ভয়াবহ নির্দেশ নিজ কানেই শুনেছেন। জ্বলতে দেখেছেন নিজের গ্রাম। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। মিয়ানমারের বর্বর সেনাদের ওপর মুসলিম রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের নানা বর্ণনা দিয়েছেন সাবেক বৌদ্ধ ও দেশটির প্রাক্তন সেনা সদস্য নাজমুল ইসলাম।

প্রখ্যাত বৃটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বিষয় তুলে ধরেন। প্রায় এক দশক ধরে রাখাইনে দায়িত্ব পালন করা এ সেনা সদস্য জানান, হামলার দিন তাকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল মিয়ানমারের সেনারা। স্বচক্ষে দেখেছেন নিজের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার দৃশ্য। তিনি বলেন, ‘বিমান থেকে নেমে সেনাবাহিনীর সিনিয়র অফিসাররা নির্দেশ দেন, সব রোহিঙ্গাদের মেরে ফেলো। যারা রোহিঙ্গাদের গুলি করবে না তাদেরকেও হত্যা করো।’

সিনিয়র অফিসাররা আরও নির্দেশ দেন, রোহিঙ্গাদের লাশ নদীতে ফেলে না দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে। সাক্ষাৎকারে নাজমুল বলেন, শেষ বিকালে তুলাতলি থেকে যখন মানুষ পোড়া গন্ধ ভেসে আসছিল তখন এক সেনা কর্মকর্তা গ্রামবাসীদের উদ্দেশে চিৎকার করতে করতে বলতে থাকেন, ‘আমাদের ১০০ প্লেট ভাত আর মুরগির মাংস প্রয়োজন। তাড়াতাড়ি নিয়ে আসো।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের মেরে ফেলার পর তাদের দেহগুলো পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। নাজমুল তা সরাসরি দেখেন। স্থানীয় বৌদ্ধরা তাদের (মিয়ানমার সেনাদের) খাবার সরবরাহ করছে।

খবরে বলা হয়, অন্তত ৬৭০০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে তোলাতুলি গ্রামেরই রয়েছে ১১ শতাধিক রোহিঙ্গা। গত সপ্তাহে এপির অনুসন্ধানে ৫টি গণকবরের সন্ধান মিলেছে। আর গণহত্যার খবর প্রকাশ করার জন্য রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আটক করে রেখেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী।

১৯৮৩ সালে এক রোহিঙ্গা নারীকে ভালোবেসে বিয়ে করে মুসলমান হন নাজমুল। গ্রামের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা ৬০ বছরের নাজমুলকে হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে আটক করা হয়।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন