রাঙামাটিতে পুলিশ-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ, আহত ৩০: মঙ্গলবার হরতাল
নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাঙামাটিতে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০জনের অধিক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুরের শিকার হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে সংঘর্ষে আহতদের নাম বিস্তারিত জানা যায়নি।
পুলিশ,ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগ নেতার উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মিছিল বের করলে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সোমবার রাতে শহরের কোর্ট বিল্ডিস্থ হ্যাপীর মোড় এলাকায় সংঘর্ষের সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, একইদিন সন্ধ্যায় শহরের রাজবাড়ি স্টেডিয়াম এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপায়ন চাকমাকে একা পেয়ে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ২০/২৫জনের ক্যাডাররা লাটিসোঠা নিয়ে হামলা চালায়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শহরের তবলছড়ি, রিজার্ভ বাজার, বনরূপা, ভেদভেদী এবং বনরূপা এবং আশপাশ বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষাভ মিছিল নিয়ে শহরের কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় জড়ো হয়। পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক হ্যাপীর মোর এলাকায় অবস্থান নেয়। এসময় পুলিশ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজকে বেত্রাঘাত করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সুপায়ন চাকমা রাঙামাটি স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলে বাসায় ফেরার সময় স্টেডিয়াম এলাকায় একদল পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কর্মী তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় সুপায়ন চাকমাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করি।’
এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার সুজন বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করা হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রশাসন এসব হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করে তবে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলা প্রতিবাদে ছাত্রলীগ যে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ একাত্মতা ঘোষণা করেছে।
পুলিশ এবং ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের টিয়াসেল নিক্ষেপ, ফাঁকাগুলি বর্ষণ,লাঠ চার্জ এবং ছাত্রলীগের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে কোর্ট বিল্ডিং এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষের সময় পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি ছুড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, ‘খেলা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি হয়। পরে মারামারি ছড়িয়ে পড়ে শহরে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’
এদিকে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় দ্রুত নিরাপত্তা বাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।