Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

মীরাক্কেলের প্রতিযোগী খাগড়াছড়ির কায়কোবাদের আজ জন্মদিন: কেক কেটে পালিত হবে আজকের পর্বে

পার্বত্যনিউজের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মো কায়কোবাদ

কায়কোবাদ

পার্বত্যনিউজ প্রতিবেদন:

কোলকাতার জি বাংলা চ্যানেলে প্রচারিত ব্যাপক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান মীরাক্কেলে সিজন-নাইনের অন্যতম কৌতুক অভিনেতা বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার মো. কায়কোবাদের আজ জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে আজ প্রচারিত মীরাক্কেলে পারফর্ম করবেন কায়কোবাদ। আজকের অনুষ্ঠানের সেটে তার জন্মদিন বিশেষভাবে পালন করা হবে বলে পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছেন কায়কোবাদ নিজেই।

মো. কায়কোবাদ তার পরিবার, জন্ম, শিক্ষা, কৌতুকের জগতে আসা, মীরাক্কেলে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কোলকাতা থেকে টেলিফোনে কথা বলেন পার্বত্যনিউজের সাথে।

কায়কোবাদের জন্ম ১৯৯৩ সালের ১৫ জানুয়ারী। বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামে। বাবা কবির হোসেন পেশায় ড্রাইভার, মা নুরুন্নাহার বেগম গৃহিনী। দুইভাই তিন বোনের সকলের বড় তিনি। পড়ালেখা শুরু করেন মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর মাটিরাঙা পাইলট হাইস্কুল পাশ করে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকল্যা বিভাগে। বর্তমানে এই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তিনি। থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে।

image-8ec70974d41d83e192c104f014fcb92f1aaf297d467c70c689344d918f2568da-V

অভিনয় ও কৌতুকের জগতে আসা প্রসঙ্গে মো. কায়কোবাদ বলেন, ছোটকাল থেকেই সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ ও ভালবাসা। কলেজ লাইফে একক অভিনয়যেমন খুশী তেমন সাজো ‘র শীর্ষ পুরস্কার দুই বছরই তিনি পেয়েছিলেন। খাগড়াছড়ি থাকতে সৃজন থিয়েটারে কাজ করতেন। বর্তমানে এই থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক। এখন কোনো থিয়েটার বা অভিনয়ের সাথে সরাসরি না থাকলেও নাট্যকলার ছাত্র হিসাবে সিলেবাসের কাজগুলো করে যেতে হয়।

পার্বত্যনিউজের নিয়মিত পাঠক মো. কায়কোবাদ বলেন, বাংলাদেশের এনটিভির হা সো’র মাধ্যমে টেলিভিশনে পর্দায় আগমণ। হাসো’র সিজন থ্রিতে লাকি সেভেন পর্যায়ে পারফর্ম করতে সক্ষম হন তিনি। এরপর মীরাক্কেলে নাইনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাছাই পর্বে কোলকাতা থেকে চট্টগ্রাম আসেন গ্রুমার কৃষ্ণেন্দু, পলাশ অধিকারী ও জি বাংলার চিন্ময় মণ্ডল। সেখানে তিনি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে টিকে ঢাকার গুলশানে ৩৪ জনের অডিশনেও অংশ নেন। ৩৪ জন থেকে চুড়ান্ত পর্বের জন্য ১০ জনের দলে টিকে কায়কোবাদ মীরাক্কেল সিজন নাইনে পারফর্ম করার সুযোগ পান।

বাংলাদেশের প্রতিযোগী হিসাবে কোলকাতার অনুষ্ঠান মীরাক্কেলে কেমন লাগছে জানতে চাইলে কায়কোবাদ বলেন, ভালবাসা কাকে বলে, কতো প্রকার ও কি কি এখানে না আসলে বুঝতে পারতাম না। এখানকার গ্রুমাররা এতো ভালবাসে বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের এটা বলে বোঝানো যাবে না। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম মেলামেশায় কিছু সমস্যা চোখে পড়লেও এখানে তেমন কিছুই চোখে পড়ে না। একটা উদাহরণ দিই। বড়দিনের অনুষ্ঠানে স্যান্টা ক্লজের কেক কেটে আমি অর্নবদাকে খাওয়াতে গেলে তিনি আগে আমাকে খাওয়ান এবং আমার খাওয়া অংশটি তিনি পরে খান। এখানকার গ্রুমাররা অত্যন্ত আন্তরিক। এর বাইরে মীর ভাই, শুভঙ্কর দা’র আন্তরিকতা আমাদের মুগ্ধ করেছে। একটি কথা জানিয়ে রাখি, এখানে কিন্তু বাংলাদেশেরও দুইজন গ্রুমার আছেন। একজন ইশতিয়াক নাসির ও অন্যজন শাওন মজুমদার।

মীরাক্কেল

বাংলাদেশের শিল্পীরা মীরাক্কেলে এতো ভাল করে কিন্তু বাংলাদেশে কেন এমন অনুষ্ঠান হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে কায়কোবাদ বলেন, বাংলাদেশে আমরা সব কিছু দ্রুত পেতে চাই। যেমন হা সো তে আমরা ৬ মাসের শুটিং একবারে করেছি। কিন্তু মীরাক্কেলে ১০-১২ দিন গ্রুমিংযের পর ১/২টা অনুষ্ঠানের শুটিং হয়। তাছাড়া অনুষ্ঠান যোদিন প্রচার হবে সেদিনে কোনো বিশেষ কিছু থাকলে, বিচারক কারা সেসব নানা বিষয় খেয়াল করে এখানে অনুষ্ঠান নির্মাণ করা হয়। বাজেটের সীমাবদ্ধতার কারণেও বাংলাদেশে এমন অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয় না।

কিন্তু বাংলাদেশের কোম্পানীগুলোই তো মীরাক্কেলের টাইটেল স্পন্সর, তাহলে আমরা কেন স্পন্সর পাই না জানতে চাইলে কায়কোবাদ বলেন, দেখেন মীরাক্কেল একটা বিপুল জনপ্রিযতা অর্জন করেছে। একটা জায়গা সৃষ্টি করেছে। আমি মীরাক্কেলে না আসলে আপনার মতো লোকের সাথে কি আমার কথা হতো? বিষয়গুলো এরকম। ফলে মীরাক্কেলের বাজেট সমস্যা নেই।

বিচারকরা বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের ক্ষেত্রে কতোটা আন্তরিক জানতে চাইলে তিনি পার্বত্যনিউজকে বলেন, মীরাক্কেলে তিনজন বিচারক রয়েছে। পরাণ বন্দোপাধ্যায়, রণিদা ও শ্রী লেখা দি। উনারা বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের প্রতি খুবই আন্তরিক। আগের পর্বগুলোতে যারা পারফর্ম করেছেন যেমন আবু হেনা রণি, ইশতিয়াক নাসির, পরশ, শাওন মজুমদার, জামিল প্রমুখ ভাইয়েরা তাদের যোগ্যতা দিয়ে বিচারকদের মনে বাংলাদেশী প্রতিযোগীদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টিতে সহায়তা করেছেন। তাছাড়া শুভঙ্কর দা নিজের বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের অনেক ভালবাসেন।

মীরাক্কেলের প্রাণ মীরের সাথে কাজ করতে কেমন লাগছে জানতে চাইলে কায়কোবাদ বলেন, মীরভাই একটা আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিভা। তার সাথে কাজ করতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। অনেকেই হয়তো মনে করতে পারেন মীরাক্কেল অনুষ্ঠান স্ক্রিপ্ট করে কাট কাট করে করা হয়। এটা একদম ঠিক নয়। এখানে সবগুলো ক্যামেরা একসাথে অন থাকে। যা কিছু হয় সবকিছু খুব স্বাভাবিক, ন্যাচারাল। মীরভাই তার নিজের মতো করে সবকিছু করে যান। তিনি কখন কি করবেন কেউ জানে না। যতো প্রকার পাগলামি হয়, তিনি ইনস্ট্যান্ট সবকিছু এমনভাবে করেন যা অবিশ্বাস্য।

মীরাক্কেলে আসার পর খাগড়াছড়ির লোকদের সাথে যোগাযোগ হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফ্যামিলি মেম্বার ও বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ হয়। তবে আমি জানি খাগড়াছড়ির লোকেরা আমার উপর খুব খ্যাপা। কারণ মীরাক্কেলে আমার পরিচয় খাগড়াছড়ি না বলে চট্টগ্রাম বলা হয়। আমি তাদের কাছে বহুবার বলেছি আমার বাড়ি চট্টগ্রাম নয়, খাগড়াছড়ি। কিন্তু এখানকার লোকেরা খাগড়াছড়ি তেমন একটা চেনে না। তাই তারা আমাকে চট্টগ্রামের বাসিন্দা বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। বিষয়টা নিয়ে আমারও মনোকষ্ট রয়েছে। কিন্তু এখানে আমার কিছু করার নেই।

মীরাক্কেলে আপনার চুড়ান্ত লক্ষ্য কি জানতে চাইলে কায়কোবাদ বলেন, একটা সুযোগ যখন পেয়েছি দেশের জন্য ভাল কিছু করতে চাই। সবাইকে আমার জন্য দোয়া করতে বলবেন, যেন দেশের জন্য সম্মানজনক কিছু করে ফিরতে পারি।

জন্মদিন উপলক্ষে আজকের সেটে বিশেষ কিছু থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, থাকবে। আজকের সেটে হয়তো গ্রুমারগণ কেক কেটে তার জন্মদিন পালন করবেন।

প্রসঙ্গান্তরে মো. কায়কোবাদ আরো জানান, দেশে থাকতে তিনি মোটামুটি নিয়মিতভাবে পার্বত্যনিউজ পড়তেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের অসহায় ও অবহেলিত মানুষের জন্য পার্বত্যনিউজের ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন