মিয়ানমার থেকে আমদানি করা সেনাবাহিনীর পোশাক জব্দ, আটক ১

teknaf pic 30-3-17 copy

টেকনাফ প্রতিনিধি:

টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এক হাজার ৭০১ পিস সেনা পোশাক (ইউনিফর্ম) জব্দ করেছে শুল্ক বিভাগ। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বো অং চায় মারমা নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বিজিবি।

বুধবার রাতে আমদানিকৃত পণ্য কায়িক করার সময় ওই পোশাক ধরা পড়ে এবং মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আচার ও শুটকির ভেতরে লুকিয়ে বাংলাদেশে আনা হচ্ছিল এ পোশাক।

উদ্ধার করা সামরিক পোশাকগুলোর মধ্যে মিয়ানমার সেনা পোশাকের (ইউনিফর্ম) ২০০পিস প্যান্ট, ২০২পিস শার্ট, ১৮৬পিস সামরিক পোশাকের ব্যাগ, ৪৫২পিস পোশাক বেল্ট, ৩০পিস সামরিক রেইনকোর্ট, ১৮পিস বুলেট রাখার ব্যাগ, ৫০টি সামরিক টুপি, ১৮পিস সামরিক সেন্ডু গেঞ্জি, ১২৭পিস ইউনিফর্ম বেইজ, ২৩০পিস মিয়ানমারের লুঙ্গি, ১৮৮ জোড়া স্লিপার স্পঞ্জ ফিতা। এ সামরিক পোশাকের সাথে ছিল আবরণযুক্ত ১৩৪ কেজি মিয়ানমারের আচার, ৪৫০ কেজি শুটকি ও ৮১০ কেজি তেতুঁল বিচি।

স্থলবন্দরের শুল্ক বিভাগ মতে, এসব পণ্য গত ২১ মার্চ ৩১২/২০১৭ নাম্বার আইজিএম মূলে মেসার্স এআর ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে আমদানি হয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসে। এ প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা দেয়া আছে, টেকনাফ পৌরসভার লেগুরবিল সড়ক সংলগ্ন জাফর চেয়ারম্যানের ভাড়া বাসা। এছাড়াও সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স রহমান ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে এসব পণ্য খালাস করা হয়।

টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগের রাজস্ব কর্মকর্তা এএসএম মোশারফ হোসেন অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত আচার ও শুটকির ভেতরে লুকিয়ে আনা সামরিক বাহিনীর এক হাজার ৭০১পিস ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি জানান, এসব পণ্যের আমদানিকারক মেসার্স এআর ট্রেডিংয়ের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুস ছালাম, সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স রহমান ট্রেডিং প্রতিনিধি নুরে আলম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হচ্ছে।

টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানান, মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসা একটি বাহিনীর পোশাক উদ্ধার করেছে কাস্টমস, তবে এ ঘটনায় সঙ্গে জড়িত বো অং চায় মারমা নামে একটি ব্যক্তিকে আটক করেছে বিজিবি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের ভেতর কোন বাহিনীর জন্য এসব পোশাক (ইউনিফর্ম) আনা হয়েছে। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে খতিয়ে দেখে আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থলবন্দরে মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পণ্যগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষায় শুল্ক কর্মকর্তার নজরদারির মধ্যে থাকায় এসব অবৈধ ইউনিফর্ম উদ্ধার করা সম্ভব হয় বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানিকৃত পণ্যের মধ্য থেকে অবৈধ ইউনিফর্ম উদ্ধার করায় আমদানি-রপ্তানিকারকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে আমদানি পণ্যের ভেতরে লুকিয়ে কোন বাহিনীর ইউনিফর্ম নিয়ে আসায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এসব ইউনিফর্ম উদ্ধারের ঘটনায় স্থলবন্দরে পণ্য আমদানিতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন