মানিকছড়িতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দু’কিশোরীর বাল্যবিয়ে বন্ধ

 

মানিকছড়ি প্রতিনিধি:

মানিকছড়ি উপজেলার বড়ডলু ও বড়বিল গ্রামে দুই কিশোরীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। অভিভাবকের মুচলেকা ও বরের দেন-মোহর পরিশোধের শর্তে পারিবারিক আইনে এ সমঝোতা করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়ডলু গ্রামের মৃত. চাঁন মিয়ার কিশোরী(১৩) এর সাথে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম দেওয়ান নগরের মো. ইসহাক ওরফে বাচা মিয়র ছেলে ২ সন্তানের জনক মো. সেলিম(২৫)এর সম্প্রতি বিয়ে হয় দরবার শরীফে।

তবে বিষয়টি সেলিমের প্রথম স্ত্রী এবং অভিভাবক কেউই জানত না। কনের এলাকার সচেতন ব্যক্তিবর্গ এবং বরের প্রথম স্ত্রী জোৎস্না আক্তার(২২) বিষয়টি জানতে পারায় প্রশাসনের নজরে আনেন বড়ডলু এলাকার শিক্ষানুরাগী এমই. আজাদ চৌধুরী বাবুল।

১০ সেপ্টেম্বর সকালে বর মো. সেলিম কনের বাড়ীতে আসলে লোকজন তাকে আটক করে মানিকছড়ি থানায় খবর দিলে অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রশীদ এর নির্দেশে এস.আই মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ দ্রুত সরজমিন থেকে বর-কনে’কে থানায় নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে বরের প্রথম স্ত্রী ও পিতা  আসেন।

অপর দিকে একই সময়ে উপজেলার বড়বিল গ্রামের মো. বেলাল হোসেন এর কিশোরী কন্যা(১৬) এর সাথে বিয়ে প্রস্তুতি চলছিল ডাইনছড়ি গ্রামের রহমত আলীর ছেলে মো. আবুল কাশেম(২২)। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে সেখানে ছুঁটে যান পুলিশ ও উপজেলা মহিলা বিষযক অফিসার মো. কামরুল আলম। সেখান থেকে বর-কনেসহ অভিভাবকদের নিয়ে আসা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে। বিকাল সাড়ে ৪টায় উভয় ঘটনায় জড়িতদের নিয়ে তথ্য-প্রমাণ যাচাই-বাচাই করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ, অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রশীদ ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম।

সেখানে প্রথমে কনের প্রকৃত বয়স জালিয়াতি করায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইনের ২০০৪(২১) এর ২ ধারায় ডাইনছড়ির রহমত আলীকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং মুচলেকা নিয়ে বিষয়টি সুরাহা করা হয়।

অপর দিকে বড়ডলু গ্রামের মৃত.চাঁন মিয়ার কিশোরীকে(১৩) তথ্য গোপন করে বিয়ে করায় এবং প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না থাকায় বিষয়টি সুরাহার জন্য পারিবারিক আইনে ছেলে বিয়ের দেন-মোহর বাবদ ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে উসুল ৫০ হাজার টাকা বাদে বাকী আড়াই লক্ষ টাকা দুই কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে এবং প্রাপ্ত টাকা মেয়ের নামে ফিক্স ডিপোজিট ও পরিবারকে সামাজিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিষয়টি সুরাহা করেন জনপ্রতিনিধিরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন