বৌদ্ধ মন্দিরের ফ্রিজে পাওয়া গেলো ৪০ বাঘের বাচ্চা

tiger_thailand

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

৪০টা ছোট ছোট ব্যাঘ্রশাবক সার দিয়ে শোয়ানো রয়েছে। সবক’টাই মৃত। বাঘের বাচ্চাগুলোকে ঢোকানো ছিল একটি বৌদ্ধ মন্দিরের রন্ধনশালার ফ্রিজারের মধ্যে। দীর্ঘ টানাপড়েনের বিতর্কিত মন্দিরটিতে পুলিশ তল্লাশি চালানোয় সামনে এসেছে এই ভয়ঙ্কর ছবি।

পশ্চিম ব্যাঙ্ককের কাঞ্চনাবুড়ি প্রদেশের বৌদ্ধ মন্দির টাইগার টেম্পল দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কে। শতাধিক বাঘ পোষা রয়েছে ওই মন্দিরে। উপাসনাস্থল হিসেবে যত না বিখ্যাত, তার চেয়েও বেশি করে টাইগার টেম্পলের খ্যাতি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। বহু পর্যটক ওই মন্দিরে গিয়ে বাঘের বাচ্চাকে বোতলে করে দুধ খাওয়ানোর ছবি তোলেন।

ওয়াত ফা লুয়াং তা বুয়া টাইগার টেম্পল নামের এই মন্দিরে পর্যটকেরা অর্থের বিনিময়ে বাঘসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী দেখতে পারতেন, ছবিও তুলতে পারতেন, এমনকি সেগুলোকে খাবারও খেতে দিতে পারতেন।
যদিও এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

টেম্পল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বণ্যপ্রাণী পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে বহু বার। বাঘের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে কিছু প্রাচীন চিনা ওষুধ তৈরির সঙ্গেও তাদের যোগ থাকতে পারে বলে শোনা যেত।

tiger_thailand_6

থাইল্যান্ডের প্রশাসন ২০০১ সাল থেকেই টাইগার টেম্পলে তল্লাশি চালানোর চেষ্টায় ছিল। পোষা বাঘগুলির সঙ্গে মন্দির কর্তৃপক্ষ ঠিক কী আচরণ করে, বন্যপ্রাণীদের নিয়ে কোনও নিষিদ্ধ কার্যকলাপ চলে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্যই এই তদন্ত শুরুর কথা হয়।

কিন্তু বৌদ্ধ মন্দিরে ঢুকে তল্লাশি চালানো খুব সহজ কাজ নয় তাইল্যান্ডে। টানাপড়েন কাটিয়ে অবশেষে সোমবার মন্দিরে ঢুকে তল্লাশি চালায় থাইল্যান্ডের পুলিশ। তাতেই মন্দিরের ফ্রিজার থেকে ৪০টি মৃত ব্যাঘ্রশাবকের দেহ মিলেছে। বাঘের ওই বাচ্চাগুলির মৃত্যু কী করে হল, জানা যায়নি এখনও।

৪০টি বাঘের বাচ্চাকে মেরে ফেলা হয়েছিল ওষুধ তৈরির জন্য? নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে ব্যাঘ্রশাবকগুলির মৃত্যুর পিছনে? জল্পনা শুরু হয়েছে এমনই নানান প্রশ্নকে ঘিরে। ব্যাঘ্রশাবকগুলির স্বাভাবিক মৃত্যুও যদি হয়ে থাকে, তা হলে তা গোপন করে দেহগুলি রান্নাঘরের ফ্রিজারে রেখে দেওয়া হয়েছিল কেন? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের ওই বৌদ্ধমন্দিরটিতে থাকা ১৩৭টি বাঘের মধ্যে তিনটিকে সোমবারই সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। এরপর থেকে মন্দিরটিতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছিলেন কর্মকর্তারা।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেও ওই বৌদ্ধমন্দিরে অভিযান চালিয়েছিল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ।
তখন সেখান থেকে শিয়াল, ভালুক ও ধনেশ পাখি সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।

সূত্র: বিবিসি ও আনন্দবাজার

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন