বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষকে ঘিরে পাহাড় ফুলের সৌরভে মাতোওয়ারা
কাউখালী প্রতিনিধি:
পাহাড়ি সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈ-সা-বি ও বাংলা নববর্ষ বরণকে ঘিরে পাহাড় যেন উৎসবে মাতোওয়ারা। প্রতিটি এলাকা সেজেছে বর্ণিলরুপে। অন্যান্য বছরের মত এবারও বেশ আনন্দমূখর পরিবেশে বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষ পালনের জন্য নানা অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। পাহাড়ের ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বাগুলো তাদের ধর্মীয় আদর্শে এ উৎসব পালন করবে। এ উপলক্ষে বুধবার সকাল ১০টায় চাকমা সম্প্রদায় কাউখালীতে আয়োজন করে বর্ণাঢ্য র্যালির।
পার্বত্য জেলায় ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের লোকজনের সংস্কৃতি ও বৈচিত্র সংরক্ষণে এগিয়ে আসার আহ্বানের মাধ্যমে শুরু হয় এবারের আয়োজন। এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় পোয়াপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল র্যালি। বৈসাবি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব পাইচামং মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন, ভাইস চেয়ারম্যান মংসুইউ চৌধুরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যানি চাকমা, চিংকিউ চৌধুরী, রাজেন্দ্র তংচংগ্যা, ঘাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান জগদিশ চাকমা, ফটিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ধন কুমার চাকমা, সাবেক চেয়ারম্যান থুইমং মারমা, ইউপিডিএফ কাউখালী ইউনিটের সংগঠক পুলক চাকমা প্রমুখ।
র্যালিটি স্কুল মাঠ থেকে শুরু হয়ে কাউখালী সদরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিণ শেষে কচুখালীতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে শেষ হয়।
বাংলা নববর্ষকে পাহাড়ের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে পালন করে থাকে। নিয়মানুযায়ী আগামী ১২ ও ১৩ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায় পালন করবে বিজু। ১৩, ১৪ ও ১৫ এপ্রিল মারমা সম্প্রদায় পালন করবে সাংগ্রাই অনুষ্ঠান।
বর্ষবরণকে ঘিরে পার্বত্য জেলা এখন যেন উৎসবে মাতোওয়ারা। অনুষ্ঠানকে সফল করতে পাড়ায় পাড়ায় চলছে ব্যাপক প্রচারণা। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে প্রতিটি অলি গলি। নিত্য নতুন পোশাকে সজ্জিত শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত। বিশেষ দিনে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে সংগ্রহের ভাণ্ডারে জমা করছে রকমারি তরিতরকারী।
চৈত্রের শেষ দিনকে মূল বিঝু হিসেবে পালন করা হয়। এটাই হচ্ছে মূল উৎসব। এ দিনে সবার ঘরে অন্তত পাঁচ পদের তরিতরকারী মিলিয়ে বিশেষ ধরণের পাঁচন রান্না করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পিঠা, তিলের নাড়ু, বিন্নি ধানের খৈ ও মিষ্টি তৈরি করা হয়। এর পাশাপাশি অতিথিদের মদও পরিবেশন করা হয়। চাকমা যুবতী মেয়েরা তাদের কোমড়ে তাদের বোনা রাঙ্গা খাদি এদিন বুকে জড়িয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়। তাছাড়া যুবক-যুবতীরা এক সঙ্গে ঘিলা, পোত্তি (বউচি) প্রভৃতি খেলায় মেতে উঠে।