বিজয় র‌্যালিসহ নানা আয়োজনে খাগড়াছড়িতে হানাদার মুক্ত দিবস পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

বিজয় র‌্যালিসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক রাশেদুল ইসলাম ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রইছ উদ্দিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের কার্যালয় থেকে একটি বিজয় র‌্যালি বেরা হয়ে র‌্যালিটি শহরের শাপলা চত্ত্বর ঘুরে টাউন হল চত্বরে পৌর টাউন হলের সামনে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধে খাগড়াছড়ি অঞ্চলের সাব-ডিভিশন কমান্ডার আলহাজ্ব দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরীসহ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা  ও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কমান্ডারের প্রতিনিধি খাড়গাছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর মো. নাজমুস সালেহীন সৌরভসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি কামনা করে মিলাদ মাহফিল করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিজয় র‌্যালি বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।

প্রসঙ্গত: ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মহকুমা ও বর্তমানে জেলা খাগড়াছড়ি হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধাকালীন এ অঞ্চলের সাব-ডিভিশন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন খাগড়াছড়ি মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে খাগড়াছড়িকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন। সেই দিন থেকে খাগড়াছড়িতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে।

১৪ ডিসেম্বর  খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় প্রতিরক্ষা ঘাঁটি রেখে ক্যাপ্টেন অশোক দাসগুপ্ত ও  দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী প্রায় দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার ফাইটিং ফোর্স নিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। কুকিছড়া অতিক্রম করে গাছবান পা রাখার সাথে সাথেই উচুঁ পাহাড় থেকে পাক বাহিনী ও তাদের দোসর মিজোরা গুলি বর্ষণ করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে টিকতে না পেরে মিজো ও পাক সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের দিন সকালে ক্যাপ্টেন অশোক দাসগুপ্তের নেতৃত্বে  মুক্তিযোদ্ধারা ভাইবোনছড়া থেকে খাগড়াছড়ি পুরো এলাকাকে শক্রমুক্ত ঘোষণা করে তৎকালীন খাগড়াছড়ি মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে খাগড়াছড়ি অঞ্চলকে শক্রমুক্ত  ঘোষণা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন