বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
লামায় নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজারো মানুষ গৃহবন্দি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:
বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে টানা দুই দিনের বর্ষণে বান্দরবানের লামা পৌর এলাকাসহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বান্দরবানের স্বর্ণ মন্দির এলাকার পুলপাড়ার বেইলি সেতু ডুবে রাঙামাটি-বান্দরবান সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কতৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, গেল দুদিনের টানা বর্ষণে মাতামুহুরী নদীসহ কয়েকটি খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লামায় কয়েক হাজার মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। সোমবার সকাল থেকে মাতামহুরী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পাহাড় ধসে প্রাণ হানির আশঙ্কায় লামা উপজেলা ও পৌরসভা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদেরকে নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার জন্য দফায় দফায় মাইকিং করা হচ্ছে।
বন্যার্থদের আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের কোয়ার্টার খুলে দেয়া হয়েছে। টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যাসহ পাহাড় ধসে মানবিক বির্পর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে দুদিনের টানা বর্ষণে সোমবার সকাল থেকে বান্দরবানের স্বর্ণ মন্দির এলাকার পুলপাড়ার বেইলি সেতু ডুবে গিয়ে রাঙামাটি-বান্দরবান সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ফলে সকাল সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌকা দিয়ে যাত্রীরা পারাপার করতে দেখা গেছে।
সেতু ডুবে যাওয়ায় নৌকা দিয়ে পারাপারকারী স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত তিনদিনের ভারী বর্ষণে পুলপাড়া খালের সেতুটি ডুবে গিয়ে সোমবার সকাল থেকে বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্থানীয়রা চরম বিপাকে পড়েছেন।
বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের কতৃপক্ষ জানান, আগামী মৌসুমে সব ঠিক হয়ে যাবে। ওখানে আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণের কাজ করছি। এ কাজটি সমাপ্ত হয়ে গেলে এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে জেলা সদরে ৩ জন, ২০০৯ সালে লামা উপজেলায় শিশুসহ ১০ জন, ২০১০ সালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৫ জন, ২০১১ সালে রোয়াংছড়ি উপজেলায় ২ জন, ২০১২ সালে লামা উপজেলায় ২৮ জন ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১০ জন, ২০১৫ সালে লামায় ৪ জন, জেলা সদরের সিদ্দিক নগরে ১ জন ও বনরূপা পাড়ায় ২ জন এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৩ জুন সদরের কালাঘাটায় ৭ জন ও রুমা সড়কে ২৩ জুলাই ৫ জন পাহাড় ধসে মারা গেছেন।