বাঘাইছড়ির প্রাঃবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের জাতীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন

বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:

প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবিতে জাতীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। শনিবার(২৩ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের’ উদ্যোগে এই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়।

এতে মহাজোটের অধীনে থাকা ১০টি সংগঠনের শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো শিক্ষক এসেছেন অনশন কর্মসূচিতে।

শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে আমাদের বেতন দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাবো। এখান থেকে বিজয় না নিয়ে আমরা ফিরে যাবো না।

বাঘাইছড়ি উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি, রিপানজু চাকমা, সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এটা সরকার-বিরোধী আন্দোলন নয়। প্রধানমন্ত্রী আমরা মর্যাদা নিয়ে ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। আপনার একটা আশ্বাসই পারে আমাদের সব সমস্যা সমাধান করতে।

বাঘাইছড়ি  উপজেলা সরকারি সহকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সমিতির সভাপতি রিপানজু চাকমা, সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন আমরন অনশনে অংশগ্রহণ করেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ওমর ফারুক বলেন, ২৩ ডিসেম্বর ভোর থেকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জমায়েত হচ্ছেন। তাদের দাবি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের পরের ধাপে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের এবং প্রশিক্ষণ বিহীন প্রধান শিক্ষকদের পরের ধাপে প্রশিক্ষণ বিহীন সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করতে হবে।

স্বাধীনতার পর প্রাথমিকে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকরা একই গ্রেডে চাকুরী করতেন। প্রধান শিক্ষকরা শুধু মাত্র ১০% বেশি বেতন পেতেন। এরপর প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের ১ধাপ বেতন ব্যবধান করা হয়। ২০০৬ সালে এই ১ ধাপ ব্যবধান বাড়িয়ে ২ ধাপ করা হয়। তখন থেকেই সহকারী শিক্ষরা ১ ধাপ বেতন ব্যবধানের জন্য আন্দোলন করে আসছেন। সহকারী শিক্ষকরা আন্দোলন করা সত্ত্বেও  ২০১৪ সালে বেতন বৃদ্ধির করার সময় সহকারীদের আরো ১ ধাপ পিছনে ফেলে ৩ ধাপ ব্যবধান করা হয়।

এতে সহকারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেই থেকে সহকারী শিক্ষকরা আলাদা ভাবে সংগঠিত হয়ে তাদের  বেতন ১ ধাপ ব্যবধানের জন্য বিভিন্ন সময়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ডিজি, সচিব পর্যন্ত এবং স্থানীয় এমপি থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত স্মারক লিপি, পোস্ট কার্ডে তাদের দাবি খোলা চিঠি প্রদানসহ বিভিন্ন সভা- সমাবেশ করে আসছেন।

প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা বেতন বৈষম্য নিরশনের আশ্বাস প্রদান করলেও গত ৪ বছরে কোন ফল পায়নি সহকারী শিক্ষকরা। তাই সহকারীদের ১০টি সংগঠন এক হয়ে সহকারী শিক্ষক মহাজোট গঠন করে ১ দফা দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন কর্মসূচি  ঘোষণা করেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লক্ষাধিক সহকারী শিক্ষক জমায়েত হয়েছেন এবং এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষক সমাবেশ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন