বাইশারী-চাক পাড়া সড়কে নির্মানাধীন ব্রিজটি সম্পন্ন হলে বদলে যাবে জনসাধারণের ভাগ্য
বাইশারী প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার রাবার শিল্প নগরী হিসেবে পরিচিত বাইশারী। দীর্ঘকাল যাবত একটি ব্রিজের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করে আসলেও এখন নির্মাণাধীন রয়েছে ফাঁরিখালের উপর ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজ।
ব্রিজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে পাল্টে যাবে বাইশারী ইউনিয়ন সদরসহ বিভিন্ন গ্রামের চিত্র। বাইশারী-চাকপাড়া সড়কে রাজঘাট এলাকায় ফাঁরিখালের উপর মাত্র একটি ব্রিজের অভাবে প্রায় দশ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বর্ষা মৌসুম ও শুষ্ক মৌসুমে যাতায়াতের জন্য চরম কষ্টে দিন অতিবাহিত করছিল।
ওই ব্রিজের উপর দিয়ে দশ গ্রামের কয়েক হাজার জনসাধারণ ছাড়াও রাবার বাগান মালিক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াত করেন। পাশাপাশি দুর্গম পাহাড়ে উৎপাদিত পণ্য, শাক-সবজি, ফল-ফলাদি, রাবার, গাছ, বাঁশসহ নানা ধরনের দ্রব্য পণ্য সহজভাবে গাড়িযোগে বাজারজাত সম্ভব হবে বলে জানালেন স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম।
সরজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে প্রায় ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বিশাল আকৃতির ব্রিজটির কাজ বিগত চার মাস আগে শুরু হয়েছে। বর্তমানে ব্রিজের অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবার পথে। ব্রীজের উপর দিয়ে দুর্গম পাহাড়ে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালি জনগোষ্ঠীসহ হাজার হাজার জনসাধারণ যাতায়াত করেন। ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন হলে হাজারো মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনসহ পাল্টে যাবে বাইশারীর চিত্র।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তাহের জানান, ব্রিজটি নির্মাণের ফলে হাজারো মানুষের পাশাপাশি উৎপাদিত দ্রব্য-পণ্য বিক্রি করে জনসাধারণ লাভবান হবেন এবং সরকারও উৎপাদিত পণ্য থেকে রাজস্ব পাবে। তিনি আরো বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের ফলে উৎপাদিত পণ্য সহজে গাড়িযোগে বাজারজাত করতে পারায় দ্রব্য পণ্য আর পচন ধরবে না।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবছার কন্স্ট্রাকশন ব্রিজটির কাজ করে যাচ্ছে। ঠিকাদার মো. আবছার বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য গুণগত মান সম্পন্ন মালামাল দিয়ে তিনি ব্রিজটির কাজ করে যাচ্ছেন। ব্রিজটি নির্মাণে তিনি এলাকাবাসীরও সহযোগিতা কামনা করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ত্রিদীপ কুমার ত্রিপুরা ও ফিল্ড সুপার ভাইজার প্রশান্ত ভট্টাচার্য্য ব্রিজটির কাজ সার্বক্ষনিক তদারকি করছেন। তারা জানান, কাজের ব্যাপারে কোন ধরনের গাফিলতি এবং নিম্নমানের দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তারা উভয়ে সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, নো কম্প্রমাইজ নীতিতে তিনি অটল। নিম্নমানের কোন প্রকার মালামাল ব্যবহার করা হলে কাজ বন্ধ করে উন্নত মানের মালামাল দিয়ে পুনরায় কাজ আদায় করে নিবেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং (এমপি)’র মহোদয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাইশারী ইউনিয়নে শুধু ব্রিজ নয়, অসংখ্য কালভার্ট, সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেচ প্রকল্প ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থাসহ নানা ধরনের উন্নয়ন মূলক কাজ চলছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাহাদুর বলেন, মন্ত্রীর অক্লান্ত চেষ্টার ফসল বাইশারীতে বিদ্যুৎতায়নসহ নানা ধরনের উন্নয়ন চলছে। আগামীতেও তিনি আরো উন্নয়নমূলক কাজ করে যাবেন বলে আশ্বস্থ করেছেন।