ফটিকছড়ির নাছিয়া চা বাগানের ১৯টি ত্রিপুরা পরিবারকে তুলে নিয়ে গেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা

fotikchori_31383_37845

রামগড় প্রতিনিধি:

এক ত্রিপুরা চা শ্রমিক বাঙ্গালী ছেলেকে ভালবেসে পালিয়ে বিয়ে করার জের ধরে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা ফটিকছড়ির নাছিয়া চা বাগানের ১৯টি ত্রিপুরা  শ্রমিক পরিবারের ৭৮ জনকে তুলে নিয়ে গেছে। ওই মেয়েকে ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত চা বাগানটিতে কোন ত্রিপুরা শ্রমিককে কাজ করতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসী গ্রুপটি।

শুক্রবার ওই পরিবারগুলোকে বাগান থেকে তুলে নিয়ে গেলেও ভয়ে তা কেউ প্রকাশ করছে না। এ ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা সীমানা লাগোয়া ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়নের সোনারখীল এলাকায় নাছিয়া চা বাগানের অবস্থান।

গত শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ মিটিংয়ের কথা বলে বাগানে কর্মরত ১৯টি ত্রিপুরা শ্রমিক পরিবারের ৭৮ জন সদস্যকে নিয়ে যায়।

সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীরা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের রামগড়ের গুজাপাড়া, মরা কয়লা, গরু কাটা, মাঝিরামপাড়া প্রভৃতি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে আটকে রাখে। সন্ত্রাসীরা বাগান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে, বাঙ্গালী ছেলেকে ভালবেসে পালিয়ে বিয়ে করা ত্রিপুরা চা শ্রমিক শব্দ মিলা ত্রিপুরাকে তাদের কাছে এনে না দেয়া পর্যন্ত ওই শ্রমিক পরিবারদের ফেরৎ দেয়া হবে না। বাগানের শ্রমিকরা জানায়,  ১৫ এপ্রিল তশিরাম ত্রিপুরার কন্যা চা শ্রমিক শব্দ মিলা ত্রিপুরা(২০) সোনারখীলের হাক্কিটিলা গ্রামের সুরত আলীর ছেলে আরিফের(২৫) সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পালিয়ে বিয়ে করার পর এনিয়ে ছেলে বা মেয়ের কোন পরিবার থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি। এর ৩/৪ দিন পর ঘটনাটি প্রকাশ হলে পার্বত্য এলাকার পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপটি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। শুক্রবার তারা বাগান থেকে সকল ত্রিপুরা চা শ্রমিকদের সপরিবারে তুলে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে শব্দ মিলা ত্রিপুরার মা-বাবা ও ভাই-বোনও রয়েছে।

বাগানের ব্যবস্থাপক মনির হায়দার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।

ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম জানান, ওই সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতাদের সাথে তিনি ফোনে কথা বলেছেন। তারা তাকে জানিয়েছে ত্রিপুরা মেয়েটিকে তাদের কাছে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত ওই শ্রমিকদের ফেরৎ দেয়া হবে না। চেয়ারম্যান বলেন, ঘটনাটি তিনি রামগড় বিজিবি জোন কমান্ডার, রামগড়ের পাতাছড়ার ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছেন।

এদিকে, ভুজপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনার কথা তিনি শুনেননি। কেউ কোন অভিযোগও করেনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন