প্রত্যাবাসনের খবর পেয়ে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা!

ঘুমধুম প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে (কাঁটাতারের বাইরে) অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নেয়া হবে, এমন খবরের পর সেখান থেকে পালাতে শুরু করেছেন তারা।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড থেকে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা সরে গেছে।

বিজিবি অভিযান চালিয়ে পালিয়ে যাওয়া বেশ কিছু রোহিঙ্গাকে আটক করতে পারলেও অধিকাংশ কুতুপালং শরণার্থী শিবির ও বাংলাদেশের বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি ও পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে। সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড থেকে হঠাৎ করে রোহিঙ্গাদের পালানোর ঘটনায় সীমান্তে বিজিবি টহল জোরদারের পাশাপাশি নিরাপত্তাও বাড়িয়েছে।

সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড অবস্থানকারী প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের মংডু জেলার ঢেকুবনিয়া সীমান্ত পরিদর্শন করে।

সেখানে প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মাণকৃত আশ্রয়কেন্দ্র ও তাদের গ্রামগুলো ঘুরে দেখেন। সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে থাকা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার সরকার খুব শিগশির ফিরিয়ে নেবে বিভাগীয় কমিশনার সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানানোর পর রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সীমান্তে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা নূর আলম জানান, রাতের আঁধারে বহু রোহিঙ্গা নো ম্যান্স ল্যান্ড ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনেককে বিজিবি ধরে আবার ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছে। কিন্তু এভাবে নো ম্যান্স ল্যান্ডে নিরাপত্তাহীনতায় থাকা সম্ভব নয়।

রোহিঙ্গা আবদুল আলীম জানান, তারা কুতুপালং-এ যেতে চায়, মিয়ানমারে নয়। কারণ সেখানে নিরাপত্তা নেই। আবারও তাদের ওপর জুলুম করা হবে। তিনি বলেন, আমরা খবর নিয়েছি সেখানে রোহিঙ্গাদের বসতবাড়ি আর নেই। যা আছে তার পাশে সেনাবাহিনী পাহারা দিচ্ছে। আমরা এখন বাংলাদেশেও আসতে পারছি না মিয়ানমারেও যেতে পারছি না।

রোহিঙ্গা নারী নূর বেগম বলেন, আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় না রেখে কুতুপালং এ নিয়ে গেলেই হয়। না হলে আমরা পালাতে বাধ্য হব।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা বলছেন, মিয়ানমারে আপাতত পরিবেশ শান্ত রয়েছে। শিগগির প্রথম দফায় জিরো লাইনের রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন