পেকুয়ায় আ’লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে অপরহরণ মামলার রহস্য উন্মোচণ: ১৬ মাস পর অপহৃতকে উদ্ধার

পেকুয়া প্রতিনিধি:

দীর্ঘ ১৬ মাস পর অপরহরণ মামলার ভিকটিম আনছারা বেগম (২০) কে মামলার বাদী রাজিয়া বেগমের এক আত্বীয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যাল এর ৫০৮/১৫ নং একটি ভিকটিম আনছারা বেগম দীর্ঘদিন পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে তার এক আত্বীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। রবিবার দুপুরে পেকুয়া থানা পুলিশের এসআই বিমল কান্তির নেতৃত্বে একটি পুলিশ ফোর্স গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পেকুয়াস্থ একটি বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে।

জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে রাজাখালী ইউনিয়নের আনছারা বেগম নামের এক মহিলাকে অপহরণের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন মা রাজিয়া বেগম। মামলায় বিবাদী করা হয় তাদের নিকট আত্বীয় উপজেলা মহিলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদীকা রাজাখালী ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমইউপি ছেনোয়ারা বেগম, তার সন্তান চট্রগ্রাম সিটি কলেজ এর অনার্স ফাইনাল বর্ষের ছাত্র সাদ্দাম হোসেনসহ আরো কয়েকজনকে। পুলিশ ও মামলার বিবাদীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে ভিকটিমকে উদ্ধারের সর্বশেষ চেষ্টা করলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ মামলার আসামী মহিলা নেত্রী ছেনোয়ারা বেগম কৌশলে ভিকটিম আনছারা বেগম তার এক আত্বীয়ের বাড়িতে আছে জানতে পেরে পুলিশকে বিষয়টি অবগত করে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানার জিম্মায় আসে।

মহিলা আ’লীগ সম্পাদীকা ছেনোয়ারা বেগম জানান, আমার স্বামী মারা যায় ২০০২ সালে। তার ১ছেলে ৪ মেয়ে। তাদের নিয়ে আমার সংসার। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে আমি এলাকায় মানুষের সেবা করে আসছি। বর্তমানে আমি উপজেলা মহিলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদীকা। গত ১৯ এপ্রিল জানতে পারি কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে আমার স্কুল পড়ুয়া সন্তানসহ আমাকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অথচ আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে মামলার বাদী রাজিয়া বেগমের স্বামী আবু তালেব আবদুর রহিমের নামের এক ব্যক্তির কুপ্ররোচনায় বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। সর্বশেষ তা করতে না পেরে তার মেয়ে অপহরণ করার অভিযোগ এনে আমাদেরকে বসতবাড়ি ছাড়া করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু মহান আল্লাহ আমাদের প্রতি সহায় ছিল। পেকুয়া থানা পুলিশের অনেক চেষ্টা  ও আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ভিকটিমের এক আত্বীয়ের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার  করা হয়েছে।  এবার আমরা এর ন্যায়-বিচার দাবী করছি।

এদিকে এ ব্যাপারে ভিকটিম আনছারা বেগমের পরিবারে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও মুঠোফোনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বক্তব্য  নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে এসআই বিমল কান্তি দে’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভিকটিমকে উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে তিনি জানান, ২০১৫ সালের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুানাল এর একটি মামলায় আনছারা বেগম ভিকটিম ছিল। মামলার স্বার্থে পুলিশ তাকে খুঁজছিল। সর্বশেষ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এবার আদালত যে সিন্ধান্ত দেয় সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন