Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

পাহাড়ে কাউন চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

Cawon Dhan News_Alikadam Pic--2

মমতাজ উদ্দিন আহমদ, আলীকদম (বান্দরবান):
পাহাড়ে কাউন চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবে সম্প্রসারণ হচ্ছে না। বাণিজ্যিকভাবে কাউন চাষের উদ্যোগ নিলে বদলে যেতে পারে পাহাড়ের অর্থনীতি। পাহাড় ও সমতলের মানুষের কাছে কাউন পরিচিত একটি কৃষিপণ্য। কাউন থেকে আমিষ ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ হয় বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

স্থানীয় জুমচাষী নয়ন ত্রিপুরা মেম্বার জানান, পাহাড়ি ঢালু জমিতে জুমে ধান চাষের সাথে মিশ্রশস্য হিসেবে কাউন চাষ করা হয়। কাউন স্থানীয়দের কাছে ‘কৈন’ নামে পরিচিত। পাহাড়ে বৈশাখ মাসে জুমে ধানবীজ বোনার সময় কাউনবীজ ছিটানো হয়। বৃষ্টির পানি মাটিতে পড়ার পর কাউনবীজ গজিয়ে ওঠে। কাউন একবীজপত্রী উদ্ভিদ। দেখতে অনেকটা সরষে দানার মতো। তবে জুমিয়াদের কাছে এটি এক প্রকার ধান হিসেবে পরিচিত। কাউন গাছ সাধারণত ৫ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। তিনি জানান, কাউন গাছ মাঝারি লম্বা, সবুজ রঙের পাতা, কাণ্ড শক্ত বিধায় সহজে নুয়ে পড়ে না। এর শীষ লম্বা, মোটা ও রোমশ প্রকৃতির হয়।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সবধরণের মাটিতেই কাউনের আবাদ হয়। পানি জমে না এমন বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভাল ফলন হয়। দেশের উত্তরাঞ্চলে অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস (নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি) পর্যন্ত বীজ বপন করা হয়। তবে জুমচাষীরা সাধারণত এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত ঢালু পাহাড়ে জুমচাষের সাথে কাউনের বীজ ছিটিয়ে আবাদ করে থাকেন। কাউনের বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে বোনা যায়। সারিতে বীজ বপন করলে চারা পরিচর্যায় সুবিধার পাশাপাশি ফলনও বেশী পাওয়া যায়। বীজ বুননের সময় সারির দূরত্ব ২৫-৩০ সে.মি. রাখতে হয়।

কৃষি বিভাগ আরো জানায়, কাউন চাষের সমতল জমিতে মাটির ঢেলা ভেঙে দিয়ে ঝরঝরে করতে হয়। আগাছা থাকলে পোকামাকড়, রোগজীবাণু ও ইঁদুরের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। তাই বপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পর নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিস্কার করতে হয়। প্রতিবিঘা (৩৩ শতাংশ) জমি থেকে প্রায় ৩৫০ কেজি পর্যন্ত কাউন উৎপাদন হয়। ১৯৮৯ সালে ‘তিতাস জাত’ নামে কাউন বীজ কৃষি বিভাগ থেকে অনুমোদন লাভ করে। এ জাতটি রবি মৌসুমে ১১৫ দিনে এবং খরিপ মৌসুমে ৮৫-৯৫ দিনে পাকে।

পাহাড়ে উপজাতি ও বাঙালীদের কাছে অতিথি আপ্যায়নে, সামাজিক উৎসব-পার্বণে কাউনের পায়েশের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে কাউন একটি সুস্বাদু খাবার। বিস্কুট তৈরিতেও কাউন ব্যবহৃত হয়। দানা জাতীয় ফসলের মধ্যে কাউনের কদর পাহাড়ে ও সমতলে সর্বত্রই সমান জনপ্রিয়। কাউন একটি পারিবারিক আয়বর্ধনমূলক চাষ। এটি পুষ্টির চাহিদা পূরণেও সহায়ক। ব্যাপক উৎপাদন হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

জুমচাষী স্বাধীন মনি তঞ্চঙ্গ্যা জানান, স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি কাউন ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে কাউন উৎপাদন হয় না। জুমচাষে ধানের সাথে কাউনের মিশ্রচাষের ফলে আলাদা জমিরও প্রয়াজন হয় না। তাই খুব সহজেই কাউন চাষ করা যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলী আহমেদ বলেন, স্থানীয় কোন চাষী এ পর্যন্ত কাউন চাষের বিষয়ে তাদের কাছে সহযোগিতা চাননি। সরকারিভাবেও কাউন বীজ বিতরণ করা হয় না। কাউন একটি পুষ্টিমানসমৃদ্ধ কৃষিপণ্য। এ চাষে স্থানীয় কৃষকরা এগিয়ে আসলে কৃষি বিভাগ সহযোগিতা দেবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন