সন্তু লারমা

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে অসহযোগ আন্দোলন: সন্তু লারমা

পার্বত্য চুক্তির দুই দশক পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয় বাস্তবায়ন না করে চুক্তি বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যদি এই চুক্তি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে হরতাল, অবরোধ, কর্মঘন্টা স্থগিত এবং অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় হোটেল সুন্দরবনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা একথা বলেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, মানবাধিকার কর্মী নুমান আহম্মদ খান, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা।

সংবাদ সম্মেলনে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা লিখিত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় জুম্ম জনগণের পিঠ আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের আর পেছনে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এখন পার্বত্য চট্টগ্রামের যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতর জন্য সরকার দায়ী থাকবে।

২৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে এখনো দুই-তৃতীয়াংশ ধারা অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে সন্তু লারমা বলেন, শান্তি চুক্তির শর্তানুযায়ী চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণ্, ১৫টি ধারা আংশিক এবং অবশিষ্ট ৯টি ধারার বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান আছে বলে সরকার মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।

সন্তু লারমা বলেন, ‘বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, বাম-ডান বা মধ্যপন্থী নানা পন্থী রাজনৈতিক দল কেউ কিছু বলে না আমাদের ব্যাপারে। ২০ বছর হলো পার্বত্য চুক্তি হয়েছে, কেউ তো তা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে না। সরকারি দল (আওয়ামী লীগ), বিএনপি সরকারের আমলেও হয়নি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সন্তু লারমা বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। পার্বত্যঞ্চলে গণতন্ত্র থাকবে কি করে। সরকার যদি অসাম্প্রদায়িক হয়, গণতান্ত্রিক হয় তাহলে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না কেন।

পার্বত্য অঞ্চলে জনসংহতির সমিতির সদস্যদের চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে সন্তু লারমা বলেন, জনসংহতি সমিতি চাঁদাবাজি করে না। তারা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করে। জেএসএসের এমন ক্ষমতা আছে, তারা অনেক কিছু করতে পারে। কিন্তু জেএসএসের একটি নীতি-আদর্শ আছে। জেএসএস চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে, সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে।

ব্যাপক হারে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করে এলাকা জবরদখল করা হচ্ছে অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনকে পর্যটনের প্রধান দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যা বিধিসম্মত নয়। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে ক্ষমতাসীন দলের শাখা অফিস ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন সন্তু লারমা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন