পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ফেসবুকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হিংসাত্মক বিদ্বেষমূলক ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা

সন্তোষ বড়ুয়া, রাঙামাটি থেকে:

বর্তমান সময়ে ‘ফেসবুক’ একটি অতি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু বিপথগামী উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এবং তাদের দোসর কতিপয় স্বার্থান্বষী তথাকথিত অনলাইন এক্টিভিস্ট ও বুদ্ধিজীবিরা ফেসবুককে তাদের হিংসাত্মক, বিদ্বেষমূলক, ঘৃণাত্মক ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা বিরোধী অপপ্রচারণার মুখপত্র বানিয়ে ছেড়েছে। তাদের এহেন প্রচারণার কারণে ইদানিং ফেসবুককে অনেকে ‘ফেকবুক’- নামেও অভিহিত করছে।

তারা বিভিন্ন নামে বেনামে ফেসবুক আইডি, পেজ আর গ্রুপ খুলে নানান রকম মিথ্যা, বানোয়াট, আজগুবি, গাঁজাখুরি আর বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে। তাদের এ সমস্ত প্রচারণার বেশীরভাগই রাষ্ট্রবিরোধী।

দেশের প্রচলিত আইন-কানুন আর সংবিধানকে তোয়াক্কা না করে তারা নিজেদের মত করে নানা রকম মিথ্যাচার করে থাকে। অনেকে হয়তো বলবেন ‘বাক-স্বাধীনতা’র কথা।

কিন্তু বাক স্বাধীনতা মানে এই নয় যে, আপনি দেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে কথা বলবেন। বাক স্বাধীনতা মানে এই নয় যে, আপনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পথ সুগম করে তুলবেন।

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অখণ্ড ভূ-খণ্ড পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি আর বান্দরবান নিয়ে ‘জুম্মল্যান্ড’ নামে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পাঁয়তারা করছে এই সমস্ত উপজাতিরা।

স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য তারা আলাদা সামরিক বাহিনী গঠন, নিজস্ব পতাকা, মুদ্রা, আইডি কার্ড এমনকি মানচিত্র পর্যন্ত ফেসবুকে প্রচার করে আসছে।

পাশাপাশি তাদের দলীয় নেতারা প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেও পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের হুমকি দিয়ে আসছে।


 

কতিপয় বিপথগামী এই সমস্ত উপজাতি সংগঠনগুলোর স্বার্থ-সিদ্ধিতে হাত মিলিয়েছে দেশের কতিপয় বুদ্ধিজীবীর মুখোশধারী দেশদ্রোহী ভদ্রমানুষগুলো।

বুঝে, না বুঝে অথবা টাকার কাছে নিজেদের বিবেক বিসর্জন দিয়ে এই মুখোশধারী বুদ্ধিজীবীরা উপজাতিদের এই সমস্ত দেশদ্রোহী কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে আসছে।

 

চলমান রোহিঙ্গা সংকটকে পূঁজি করেও পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে উপজাতিরা। রোহিঙ্গা সংকটের আগুন পার্বত্য চট্টগ্রামে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ভেতরে ভেতরে পাহাড়ী উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।

বিশেষ করে ফেসবুকে এইসব উপজাতীয় সন্ত্রাসী ও তাদের সমর্থক আইডি/পেইজগুলোতে রোহিঙ্গা সঙ্কটকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের উষ্কানীমূলক পোস্ট প্রদান করছে।

এসব পোস্টে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে রোহিঙ্গাদের মতো বাঙালীদের জানমাল ধংস করে তাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার হুমকি দেয়া হয়েছে।

ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছে একটি স্বাধীন দেশ। বর্তমান চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদেব রায় ছিলো একজন কু-খ্যাত রাজাকার। ত্রিদিব রায় বাংলাদেশের একমাত্র রাজাকার যে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও পাকিস্তান মন্ত্রীসভার সদস্য ছিল। মৃত্যুর পর যার লাশ পাকিস্তানেই সমাহিত করা হয়েছে।

সেই কু-খ্যাত রাজাকারের অনুসারীরা আজ স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রকে খন্ডিত করে ‘জুম্মল্যান্ড’ গঠনের পাঁয়তারা করছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ০৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ সূর্যসন্তানের একজন হলেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ। যার সমাধিস্থল রাংগামাটি জেলাতে। সেই পবিত্র মাটি কি জুম্মল্যান্ডের অংশ হবে?

উপজাতীদের এই সমস্ত কার্যক্রমকে শুধুমাত্র ফেসবুকে অপপ্রচার হিসেবে না দেখে রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক কার্যক্রমের জন্য তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার এবং প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন