Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

পার্বত্য চট্টগ্রামে অপপ্রচার: মুদ্রার অন্য দিক

মাহের ইসলাম:

মশাল মিছিল ঠিক কবে, কোথায় এবং কি পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয়েছিল, আমার জানা নেই। জানার জন্যে অল্প-স্বল্প চেষ্টা যে করিনি তা নয়, কিন্তু জানতে পারিনি। তবে উৎপত্তি যেভাবেই হোক না কেন, মশাল মিছিলকে আমার অন্য মিছিলের তুলনায় বেশি জীবন্ত মনে হয়। তাই আল জাজিরার মত একটা বিখ্যাত মিডিয়াতে যখন বাংলাদেশের একটা সংবাদের সাথে মশাল মিছিলের ছবি থাকে তখন আমার মনোযোগ আকর্ষণ না করে পারে না। আর যখন দেখলাম যে, সংবাদটি পার্বত্য চট্রগ্রামের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে, তখন একটু বাড়তি কৌতূহল নিয়েই সংবাদটি পড়তে শুরু করি।

২৮ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আল জাজিরার যে সংবাদটি আমার এক বন্ধু আমার সাথে শেয়ার করেছেন, সেটি সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী দুই মারমা বোনের কথিত ধর্ষণের ব্যাপারে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে, সংবাদটিতে বলা হয়েছে কিভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্রগ্রামে ধর্ষণ করে ঘটনাটি আড়ালের চেষ্টা করছে। মশাল মিছিলের ছবি দেখিয়ে দাবী করা হয়েছে যে সাধারন মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে।

সংবাদটি পড়ে আমি উপলব্ধি করলাম, পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠনগুলো অপপ্রচার চালানোতে অভাবনীয় দক্ষতা অর্জন করেছে। শুধু তাই নয়, অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে  মানুষের হৃদয় জয়ের পথে আমাদের দেশের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে তারা সাথী হিসেবে পেয়েছে, যারা নিজেদেরকে সংবেদনশীল, ধর্মনিরপেক্ষ এবং নারীর অধিকার আদায়ের জন্যে নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে পরিচিত হতে পছন্দ করেন।


  1. এ সংক্রান্ত আরো খবর ও লেখা পড়ুন
  2. পাহাড়িদের সরলতা কি গুটিকয়েকজনের ক্রীড়নক: প্রেক্ষিত বিলাইছড়ি ইস্যু
  3. মারমা দুই বোন, অপপ্রচার এবং ডিজিটাল যুগের দুর্বলতা
  4. পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীঃ নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত দোষী
  5. মানবতার পাহাড়ি রঙ: প্রেক্ষিত নারী নির্যাতন
  6. বিলাইছড়িতে নির্যাতিতা দুই কিশোরীর শরীরে শুক্রানুর আলামত পাওয়া যায়নি
  7. আমরা ভাল আছি, শান্তিতে আছি: দু’মারমা কিশোরী
  8. বিলাইছড়িতে কথিত নির্যাতিত দুই কিশোরীর নাম ভাঙিয়ে ফায়দা লুটতে ব্যস্ত বিশেষ মহল

এই সংবাদটিতে  চাকমা জনগোষ্ঠীকে “দেশের অত্যাচারিত জনসংখ্যা” হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে। পার্বত্য চট্রগ্রামকে পরিচিত করা হয়েছে এই বলে যে, কয়েক দশক ধরে এ অঞ্চলের ১৩ টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাথে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর হালকা সংঘাত (Low Intensity Conflict) চলছে।  পুলিশ কর্তৃক আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দুই মারমা কিশোরীকে তাদের পিতা-মাতার কাছে হস্তান্তর করাকে ‘জোরপূর্বক অপহরণ’ এর তকমা লাগানো হয়েছে; এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের  উদ্ধৃতি দিয়েই অবশ্য এটি করা হয়েছে।এই খবরে মিসেস ইয়ান ইয়ানকে উপস্থাপন করা হয়েছে চাকমা জনগোষ্ঠীর একজন সদস্যা হিসেবে যিনি “ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের জন্য লড়াই করছেন”।

আমি অবাক হবো না যদি ইতোমধ্যেই ভাবতে শুরু করে থাকেন যে, কারা চাকমাদেরকে অত্যাচারিত জনগোষ্ঠী মনে করে, কারা বলতে পারে যে পার্বত্য চট্রগ্রামে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সাথে ১৩টি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর সংঘাত (Low Intensity Conflict) চলছে, এবং আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করাকে ‘জোরপূর্বক অপহরণ’ এর তকমা কারা দিতে পারে! সঙ্গত কারণেই আমি মনে করি যে, আল জাজিরার সংবাদটিতে যে শুধুমাত্র মুদ্রার একপাশকে বিকৃত করে দেখানো হয়েছে– তা বোঝার জন্যে একজন পাঠকের স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তাই যথেষ্ট।

তেমনি একজন স্বাভাবিক পাঠকের দৃস্টিতেই এই নির্দিষ্ট সংবাদের কিছু কিছু অসংগতি তুলে ধরার প্রয়োজন বোধ করছি। এক্ষেত্রে, আমি যেসব সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদ মাধ্যমের তথ্য ব্যবহার করছি তার বেশিরভাগই পাহাড়ী ঘরানার বা ইতোমধ্যে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে পরিচিত। ইচ্ছে করেই আমি এটি করছি, অন্যথায় বাঙ্গালীর প্রতি সহানুভূতি দেখায় এমন মিডিয়া উল্লেখ করলে আমার দাবিকে অনেকে দুর্বল ভাবতে পারেন। শুরুতেই বলে নেয়া ভাল যে, ২২ জানুয়ারি প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছিলো তা প্রমাণ করার ইচ্ছা আমার নেই। সেই ভার যেহেতু মামলা হয়েছে তাই তা আদালতের বিচার্য অথবা সচেতন পাঠকের হাতেই রইল।

যৌন হয়রানির কোন ঘটনা ঘটলে, যে কোন বাবা-মা তাদের সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ করবে, এই স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড, কিন্তু মারমা দুই বোনের ক্ষেত্রে তা হয়নি। কেন হয়নি, সেটির কোন উত্তর এই সংবাদে নেই। পাঠকদের কি জানানো উচিত নয় যে, কেন বাবা-মা তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেনি বা কেন তারা পুলিশে যায়নি? মেয়ে দুইজনকে ২২ জানুয়ারি সকালে গ্রাম থেকে ‘কে বা কারা’ নিয়ে যাওয়ার পর ২৩ জানুয়ারী দুপুরের পরে রাঙ্গামাটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বাবা-মাকে ছাড়াই দুইজন নাবালিকাকে গ্রাম থেকে তুলে নেয়া এবং হাসপাতালে ভর্তি করার মধ্যবর্তী ৩০ ঘণ্টায় কী ঘটেছে,  তা প্রকাশ করা হয়নি। কারা তাদেরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়েছিল, কোথায় তারা ছিল, এসময় তাদের সাথে কী আচরণ করা হয়েছে- অতি গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনো অজানা। চিকিৎসা করাই যদি উদ্দেশ্য হবে, তাহলে ভর্তির পরদিনই মেয়ে দুইজনকে নিজেদের জিম্মায় নেয়ার জন্যে কিছু স্থানীয় নেতা-নেত্রী ও মানবাধিকার কর্মী এতটা উঠে পড়ে লেগেছিলো কেন– সেটি আজো অজানা রয়ে গেছে। প্রশ্ন থেকেই যায়, এই মেয়েদের হাসপাতালে ভর্তি করার পিছনে তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল?

অতএব, এটা সুস্পষ্ট যে, অনিচ্ছাকৃত হোক বা ইচ্ছাকৃতভাবেই  সম্পূর্ণ সত্যের পরিবর্তে এখানে আংশিক সত্য প্রকাশ করা হয়েছে।

খেয়াল করে দেখুন, ২২ তারিখেই এটা পোস্ট করা হয়েছে। এই পোষ্টের অন্যান্য দাবিগুলোর সত্যতা যাচাই করার ভার পাঠকের উপরই রইল; বিশেষ করে, ঘরে কয়জন ঢুকেছিল এবং বাবা-মায়ের উপস্থিতির বিষয়টি।  এমন অনেক মনগড়া পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়া এবং কিছু জাতীয় দৈনিকে দেখা গেছে।

এখানে আরো লুকানো হয়েছে যে, মেয়ে দুটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ইচ্ছেমতো কাহিনী প্রচার শুরু হয়ে যায়; একই সাথে হাসপাতালের সামনেও অনেকে জড়ো হয়।

বাবা-মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে, উচ্চ আদালত মেয়ে দু’জনকে তাদের  পিতামাতার কাছে হস্তান্তর ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আদেশ দেয়। পুলিশ কর্তৃক আদালতের এই আদেশ বাস্তবায়নকে এই সংবাদে বলা হয়েছে, ‘জোরপূর্বক অপহরণ’ (forced abduction) যা কিনা সশস্ত্র বাহিনী করেছে। অবশ্য এমন উদ্ভট দাবিকে জায়েজ করার জন্যে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীর সুত্র উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি আদালতের এই আদেশের বৈধতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে; কারণ অন্য আদালতে মেয়ে দু’জনকে চাকমা সার্কেল চিফের এখতিয়ারে নেয়ার জন্যে আগেই রীট করা হয়েছিল।

তবে দুইজন নাবালিকাকে পিতা-মাতার পরিবর্তে তার নিজের জিম্মায় নিতে চাইলেও  মিসেস ইয়ান ইয়ান ও তার দোসরদের পদক্ষেপগুলির কোন সমালোচনা করা হয় নি। এমনকি, আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বাঁধা দেয়া, এমনকি রীতিমত শারীরিক প্রতিরোধের পরেও প্রশ্ন উঠে নি যে, এখানে আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে কিনা? এমনটি এই কারণেই সম্ভব যে, আল জাজিরার ঐ প্রতিনিধি শুধুমাত্র ইয়ান ইয়ান এবং তার প্রতি সহানুভূতিশীল সমর্থকদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন। তাই অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় উপেক্ষা করে এমন একতরফা ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আর এটা করতে গিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছেন; যেমন, ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট, যেখানে ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য যে, মেডিক্যাল বোর্ডের ৩ সদস্যার মধ্যে একজন বড়ুয়া ও একজন পাহাড়ি ডাক্তারও ছিলেন।

পুরো সংবাদটি পড়তে পড়তে বারবার মনে হচ্ছিল যে, এই সাংবাদিক অন্ধের মতো মিসেস ইয়ান ইয়ান এবং তার সমর্থক ও সহানুভূতিশীলদের বিশ্বাস করেছেন।এমনও মনে হয়েছে যে, তিনি প্রকৃত সত্য উপস্থাপন না করে, মিথ্যার সাথে  কিছু সত্য ও পর্যবেক্ষণ মিশ্রিত করার এবং মিথ্যা উপসংহার উপস্থাপনের জন্যে কোন ধরনের বাধ্যবাধকতার শিকার হয়ে  থাকতে পারেন। এই কারণেই হয়তবা বাবা-মায়ের দাবী এবং তাদের কথা কিছুটা কমই উল্লেখ করা হয়েছে। আমার অদ্ভুত লেগেছে যে, একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে খোলাখুলিভাবে বাবা-মা দাবি করেন যে, মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়নি– সেটি পর্যন্ত এই সংবাদে উল্লেখ করা হয়নি।

প্রকৃতপক্ষে, পুরো সংবাদ জুড়ে পিতামাতার দাবি কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ এমনকি মেয়ে দুইজনের পিতা-মাতার পরিবর্তে,  স্থানীয় কিছু নেতা-নেত্রী ও মানবাধিকার  কর্মীদেরকে কথা অনেক বেশি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়ছে। তাই আমি অনুভব করছিলাম যে, এই প্রতিনিধি ও ঐসব স্থানীয় নেতা-নেত্রী ও মানবাধিকার  কর্মীদের মাঝে এক ধরনের বোঝাপড়া থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। পাশাপাশি, প্রকৃত গল্পটি খোঁজার পরিবর্তে হয়তো তিনি কোন বিশেষ ব্যক্তির বীরত্বপূর্ণ ইমেজ সৃষ্টির লক্ষ্যেই নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।

আমি সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছি যখন মেয়ে দুইজনের ছোট ভাইয়ের কথা বলা হয়েছে। সংবাদদাতা দাবি করেছেন যে, “প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছোট ভাই মার্মা ভাষায় বলেন যে, ‘এক নয়, তবে দুইজন লোক রুমটিতে প্রবেশ করেছে’।” অথচ, পাহাড়িদের ভিডিও ক্লিপে কিন্তু ‘একজন’ এর কথাই বলা হয়েছে। যেহেতু সাবটাইটেল সহ এই ভিডিওটি এমন একটি Facebook পেইজে  আপলোড করা হয়েছিল যা তার সেনাবাহিনী বিরোধী বক্তব্যের জন্য সুপরিচিত, সেহেতু এই ক্লিপের সাবটাইটেল অবিশ্বাস করার কোন কারণ থাকতে পারে না। তাহলে, এই প্রতিবেদক ছোট ভাইয়ের কথার এমন মিথ্যে অনুবাদ কেন প্রচার করবেন? নাকি তিনি নিজেই পাহাড়িদের অপপ্রচারে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন এবং মিথ্যে প্রচারে সর্বতোভাবে চেষ্টা করছেন?

যেকোনো নির্যাতিতার জন্যেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া আতি প্রয়োজনীয়। কিন্তু শুরু থেকেই কিছু নেতা-নেত্রী মেয়েদেরকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেষ্টা ছিল। অজ্ঞাত কারণে, এই সত্যটি, প্রতিবেদকের মনে কোন ধরনের সন্দেহ উত্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে, প্রতিবেদক এটিকে সত্য বলে প্রমাণ করেছেন যে, “সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পুরো হাসপাতালটিকে নজরদারির আওতায় রাখে এবং বহিরাগতদের প্রবেশের অনুমতি দেয় না।” বাস্তবতা হলো, এই সংবাদেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, বড় মেয়েটির স্বাক্ষর করা একটি চিঠি এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হস্তগত হয়েছে। আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, কিছু ভলান্টিয়ারসহ ইয়ান ইয়ান হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।

এমন কি, মিসেস ইয়ান ইয়ানের ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক শুরু থেকে হাসপাতালের মধ্যে মেয়েদের সাথে ছিল। সংবাদদাতা আরো লিখেছেন, “আল জাজিরার সাথে কথা বলার সময় ইয়্যান ইয়ান বলেন, ২২ জানুয়ারি ভোর বেলা নিরাপত্তা বাহিনীর চারজন সদস্য মারমা পরিবারের ঘরে প্রবেশ করেন”। সংবাদদাতা হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই উল্লেখ করেছেন যে ‘দুইজন পুরুষ’ বাড়িতে প্রবেশ করেছিল।

শুরুতেই বলে নিয়েছি যে, উরাছড়িতে ২২ তারিখে কি ঘটেছিল, আমি তা প্রমাণ করতে চেষ্টা করছি না। তাই, এই ঘটনাটি নিয়ে অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমে কি প্রকাশিত হয়েছে- তা এখানে উল্লেখ করতে চাই না। উৎসুক যে কোন ব্যক্তিই সেগুলো দেখে নিতে পারবেন। যা নিশ্চিত, তা হলো এই যে, আল জাজিরার এই সংবাদে বেছে বেছে কিছু নির্বাচিত ঘটনা বিকৃত বা আংশিক রূপে প্রকাশ করা হয়েছে। এটা দিবালোকের মতো পরিস্কার যে, এই সংবাদে প্রদত্ত বেশিরভাগ তথ্যই পক্ষপাতদুষ্ট, কারণ একটি বিশেষ ঘরনার কাছে থেকেই সকল তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকতে পারে; প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা যাচাই করা হয়নি বলে দৃশ্যমান। মূলত কিছু বিশেষ লক্ষ্যের দিকে নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায় বা জনগণের মনোভাবকে প্রভাবিত করাই এই সংবাদের লক্ষ্য হয়ে থাকতে পারে।

– লেখক: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গবেষক।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ, পার্বত্য চটগ্রাম, বিলাইছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন