নাইক্ষ্যংছড়িতে র‌্যাবের অভিযানে আনসার ক্যাম্প থেকে লুট করা রাইফেলসহ ১০ অস্ত্র উদ্ধার

untitled-2-copy

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক: 

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম তুমব্রু পাহাড়ি এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে অভিযান চালিয়ে ৫টি রাইফেলসহ ১০টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফের নয়াপাড়া আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া এসএমজি ও রাইফেল রয়েছে বলে র‌্যাব জানায়।

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গাশিবিরের উল্টো দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু পাহাড়ের পুরানপাড়া জঙ্গলের দুটি আস্তানায় অভিযান চালায় র‌্যাব। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি এসএমজি, দুটি রাইফেল, দুটি এম-টু রাইফেল, পাঁচটি দেশি বন্দুক। অভিযানে ১৮৯টি রাইফেলের গুলি ও ২৬টি তাজা কার্তুজও উদ্ধার করা হয়েছে।

দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিনসহ এই দুই বাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অভিযানের বিষয়ে গতকাল বেলা দেড়টার দিকে তুমব্রুর পাহাড়ি এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, উদ্ধার করা ৫টি অস্ত্র ২০১৬ সালের ১২ মে রাতে টেকনাফের আনসার ক্যাম্প থেকে লুট করা হয়। ওই ক্যাম্প থেকে তখন ১১টি অস্ত্র লুট হয়। বাকি অস্ত্রের সন্ধানে তমব্রুর পাহাড়-জঙ্গলে আরও দুই দিন অভিযান চলবে।

সংবাদ সম্মেলনে আনসারের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান খান বলেন, টেকনাফের ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া ৫টি অস্ত্র র‌্যাবের অভিযানে উদ্ধার করা গেছে। অস্ত্র উদ্ধার করায় তিনি র‌্যাব কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।

২০১৬ সালের ১২ মে রাতে সন্ত্রাসীরা টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের শালবন আনসার ক্যাম্পে হামলা চালায়। ক্যাম্পের আনসার কমান্ডার আলী হোসেনকে হত্যা করে অস্ত্রাগার থেকে ১১টি অস্ত্র ও ৬৭০টি গুলি লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) জন্য আনসার ক্যাম্প থেকে অস্ত্রগুলো লুট করা হয়েছিল। অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা মিয়ানমারে পালিয়ে গেছে। আর আনসার ক্যাম্পে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ওমর পাকিস্তানের নাগরিক।

পুলিশের এই দাবির বিষয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ কখন কী বলেছে আমরা জানি না। টেকনাফের আনসার ক্যাম্পে হামলা ও ১১টি অস্ত্র লুটের পর থেকে র‌্যাব সদস্যরা এর পেছনে লেগেছিল। জঙ্গল থেকে লুণ্ঠিত ৫টি অস্ত্র ও ১৮৯টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই মামলার পলাতক দুই আসামিকেও র‌্যাব গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।’

এদিকে গত সোমবার রাত ১০টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গাশিবির এলাকা থেকে একটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগানসহ দুই রোহিঙ্গা খাইরুল আমিন ও আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করে। তারা টেকনাফের আনসার ক্যাম্পে হামলা ও ১১টি অস্ত্র লুটের ঘটনায় করা মামলার আসামি।

জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল সকালে তুমব্রু এলাকার পুরানপাড়ায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখানে সন্ত্রাসীদের দুটি আস্তানার মাটি খুঁড়ে ওই অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে র‌্যাব। অভিযানে একটি আস্তানা থেকে হাছান আহমেদ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

– সূত্র: প্রথমআলো

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন