থানচিতে ইটভাটার জন্য পাহাড় কাটা চলছে নির্বিঘ্নে 

 

img_2179-copy

থানছি প্রতিনিধি:

থানচি উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায়  ইটভাটায় ব্যবহারের জন্য নির্বিঘ্নে পাহাড় কাটাচ্ছে এক প্রভাবশালী নেতা।পাহাড় কাটার ফলে মারাত্মকভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনিকভাবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে সাঙ্গু নদী ও তার আশেপাশের খাল ও ঝিরিতে নাব্যতা হারাচ্ছে । পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।

থানচি হেডম্যান পাড়া  পূর্বে ৫০ গজ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তরে ২০ গজ, বৌদ্ধ বিহার থেকে ৩০ গজের দূরত্বে ইটভাটা অবস্থিত।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে ১ কিলোমিটার থানচি আলিকদম সড়কের নিচে মরহুম মংঙৈ চেয়ারম্যানের জমিতে সেগুন গাছ তুলে বুলডোজার দিয়ে পাহাড় কাটতে। নম্বরবিহীন ট্রাকে করে ৭ থেকে ৮ শ্রমিক অবাধে  মাটি ভর্তি করছিল। সাংবাদিকদের দেখতে পেয়ে বুলডোজার, ট্রাক ড্রাইভার ও শ্রমিকরা পালিয়ে যায়।

ড্রাইভার নাম বলতে রাজি না হলেও জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, সুজন কোম্পানির সাথে ম্যানেজার সরোয়ার ফোনালাপ করে আমাদেরকে এখানে পাঠিয়েছেন মাটি কাটার জন্য।

এ বিষয়ের ইট ভাটা সহকারী ম্যানেজার প্রদীপ দাশ-এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাহাড় কাটা, ইট ভাটা তৈরী ও জ্বালানি কাঠ ব্যবহারে আমাদের কোম্পানির নিকট পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের আদেশ পত্র ও জেলা প্রশাসকের অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু  তার ফটোকপি আমাদের দেয়া হয় নি, তাই আমি এ বিষয়ে আর কিছু জানি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক  বলেন, আমাদের পাড়ায় সকল শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা জরুরী মনে করছেন। ইট ভাটা মালিক ও সংশ্লিষ্টরা অনেক প্রভাবশালী। কোন রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও  প্রশাসন আমাদের কথা শুনবে না।

শুক্রবার রাস্তা নির্মাণ কাজে ঢালাইয়ের সময় কথা হলে সুজন কোম্পানির ম্যানেজার সরোয়ার জানালেন, পাহাড়ে কয়লা আর মাটি কোথায় পাবো বলেন, পাহাড় কাটা ও কাঠের জ্বালানি দিয়ে পোড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আমার কোম্পানি  মাসোহারা দিয়ে যাচ্ছি  এবং রাস্তায় কাজের স্থানীয় পাথর ও বালির সর্বরাহও আমরা দিয়ে যাচ্ছি ।

ম্যানেজার আরও বলেন, আমার কোম্পানি সুজন সাহেবের থানচি বাজার হতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে। রাস্তা নির্মাণ কাজে স্থানীয় বালু ও বিভিন্ন ঝিরি-ঝর্ণা থেকে পাথর উত্তোলন ও  ব্যবহার করছি।

এ বিষয়ের থানচি রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে তিনি দীর্ঘদিন থেকে অনুপস্থিত বলে কার্যালয়টি বন্ধ পাওয়া যায় । শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম স্বপরিবারে তিন দিনের নাফাখুম ভ্রমণে থাকায় এবং সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় বক্তব্য নেয়ার সম্ভব হয় নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন