parbattanews

ত্রিপুরা পল্লীতে ৪ শিশু মৃত্যুর কারণ হাম

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ত্রিপুরা পল্লীতে ৪ শিশুর মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত টিম। মূলত ভাইরাসজনিত হামে আক্রান্ত হয়ে শিশুদের মৃত্যু ঘটেছে বলে তদন্ত টিম নিশ্চিত করেছে।

একই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে ২৫টি শিশু। সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন জানান, হাটহাজারীর দুর্গম ত্রিপুরা পল্লীতে অজ্ঞাতরোগের ৪ শিশুর মৃত্যুর খবর জানার পর গত রোববারই আক্রান্ত শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। এছাড়া সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আক্রান্ত শিশুদের পরীক্ষা করেন। ঢাকায় পাঠানো রক্তের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাদের শরীরে হামের ভাইরাস পাওয়া গেছে। এখন সেই অনুযায়ী আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ত্রিপুরা পল্লীতে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪ শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

রোববার সকালে উপজেলার ১ নম্বর ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডস্থ দক্ষিণ উদালিয়ার সোনাইরকুল দূর্গম ত্রিপুরা পল্লীতে অন্ন বালা ত্রিপুরা (৭) নামের এক শিশু মারা যায়।

এর আগে শুক্রবার সম রায় ত্রিপুরা (৩), ২১ আগস্ট একই দিনে অন্ন রায় ত্রিপুরা (৫) ও কিশা মনি ত্রিপুরা (৩) নামের দুই শিশু মারা যায়।

এভাবে একের পর এক শিশু মৃত্যু ঘটনায় ত্রিপুরা এলাকার পরিবারগুলোর মধ্যে চরম আতংক দেখা দিয়েছে।

নয়ন বিকাশ ত্রিপুরা, বন কুমার ত্রিপুরাসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ দুর্গম পল্লীতে প্রায় ৫৫টি পরিবারের ৪০০ লোকের বসবাস হলেও এখানে কোনো স্বাস্থ্যকর্মী আসে না । অনেক আগে একজন স্বাস্থ্যকর্মী এসেছিলেন মাত্র একদিনের জন্য। এর পর আর কোনো স্বাস্থ্যকর্মী এমনকি স্থানীয় ইউপি সদস্যও আমাদের খবর নেয়নি।

তারা জানান, আরও অনেক শিশুই এ অজানা রোগে আক্রান্ত এখন। আক্রান্ত শিশুগুলোর গায়ে প্রথমে বিচি এবং পরে এক প্রকার ঘায়ের মতো হয়ে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর আক্রান্ত শিশুটি আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম ত্রিপুরা পল্লী থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে উদালিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে যেতে পারেন না অনেকেই। উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রশাসন থেকে তেমন কোনো সুযোগ সুবিধাও তারা পান না।

স্থানীয় সংবাদকর্মী মহিন উদ্দীন, সাজ্জাদসহ অনেকেই বলেন, দুর্গম এলাকায় হওয়াতে এ ত্রিপুরা পল্লীর জনগণ নানা ধরনের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের দেখার মতো কেউ নেই বললেই চলে। এমন কি স্থানীয় ইউপি মেম্বারও নাকি আজ পর্যন্ত তাদের দেখতে আসেননি।

হাটহাজারী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইমতিয়াজ সাংবাদিকদের জানান, এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আক্তার উননেছা শিউলী সাংবাদিকদের জানান, খবরটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলেছেন।

Exit mobile version