টেকনাফ উপকূল দিয়ে কৌশলে মানব পাচার অব্যাহত: ধরা ছোঁয়ার বাইরে পাচারকারীরা

DSC03141

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার:
টেকনাফ উপজেলায় সম্প্রতি মাদক ও মানব পাচার কাজে জড়িত গডফাদারদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকায় কতিপয় গডফাদার আড়াল হয়ে গেলেও অপকর্ম বন্ধ হয়নি বলে জানা গেছে। এসব কারণে চোরাই পথে বিদেশীগামী লোকদের অনেকে নিখোঁজ আবার অনেকে কারাগারে জিম্মি দশায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারপরও এখন নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট আবারো অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।

বিভিন্ন সুত্র ও অভিযোগে জানাযায়-এদিকে গত ৩ মার্চ টেকনাফে পর্যটকবাহী জাহাজ বে-ক্রজে চাকরীতে এসে আদম পাচারকারী চক্র ভোলা জেলার চরচন্দ্র প্রসাদের রাজ্জাক সিকদারের ছেলে শাহীন নামক এক যুবককে অপহরন করে সাবরাং কচুবনিয়ার শফিকের নেতৃত্বে পাচার চক্রের সদস্যরা সাগরে বড় ট্রলারে তুলে দিতে সাগরে নিয়ে যায়। কিন্তু এই অপহরনের বিষয়টি থানায় জানানোর পর পুলিশের তৎপরতায় সাগর থেকে ফিরিয়ে এনে শাহীনকে ছেড়ে দিতে দেওয়া হলেও আদম পাচার চক্রের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না থাকায় চক্রটি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যারা এখনো সক্রিয় বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ।

বিগত ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবির ঘটনায় শাহপরীরদ্বীপ ডাঙ্গরপাড়ার হাশেম আলীর ছেলে রফিকের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। মা রেহেনা ও বাবা হাশেম মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে গিয়ে ছেলেকে আজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলে। তাছাড়া গত ২০১২ সালের ২৭ অক্টোবর ঈদের দিন রাতে মালয়শিয়াগামী ১৩৫ যাত্রী নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ পাচার চক্রের নায়ক সাবরাং কচুবনিয়া এলাকার ছিদ্দিকের নেতৃত্বে এক বিশাল সিন্ডিকেট। এ ঘটনায় মৃত্যুর মূখ থেকে সাবরাং ডেইল পাড়ার আবু বক্কর ফিরে আসলেও হাফেজ উল্লাহ, কামাল হোসন ও আমির হোসনসহ অনেকেই এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে। এ মানব পাচারের ঘটনাটি বড় ট্রাজেডি হিসাবে উলে¬খ রয়েছে। বর্তমানে এ চক্র আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর মানব পাচার চক্র সাগর পথে মালয়েশিয়ার পাচারের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লোকজনকে সাগরে মৃত্যুর মূখে টেলে দিচেছ। এ পথে পাচার হতে গিয়ে অনেক মা, বাবা ও সন্তান হারিয়ে এখনো অশ্রু ফেলছে।

সাগর পথে চোরাইভাবে মালয়েশিয়ায় মানব পাচারকারী গডফাদারেরা সাবেক মিয়ানমার নাগরিক মৌঃ আব্দু রহিম, শাহপরীরদ্বীপ বাজার পাড়ার ধলু হোছন, ডাঙ্গর পাড়ার মোঃ ফিরোজ, কাটাবনিয়ার বাদ কোম্পানী, কচুবনিয়ার ছিদ্দিক আহমদ, আব্দুল হামিদ, বাগু, নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের আমান উল্লাহর সহযোগী হিসেবে আদম পাচারে জড়িত শাহপরীরদ্বীপ হাজী পাড়ার মুজিব উল্লাহ, মাঝর পাড়ার সৈয়দ উল্লাহ, মোঃ শফিক বাইন্যা, ডাঙ্গর পাড়ার হোসন আলী, রাবেয়া, মোঃ কাশিম প্রঃ পুয়া মাঝি, মোঃ তারেক, ইলিয়াছ, দক্ষিণ পাড়ার কাছিম, নূর হাকিম মাঝি, সাহাব মিয়া, বাজার পাড়ার মোঃ ইউনুচ, উত্তর পাড়ার জিয়াবুল, পশ্চিম পাড়ার কালা, সাবরাং কচুবনিয়ার শফিক ও রফিক, মোঃ হোসন প্রঃ কর মাছন, শাহজাহান, ইউনুচ, নজির, আসিফ, আবুল কালাম, হারিয়াখালীর হেলাল, হারুন, হাসন, হামিদ, জাহেদ হোসন, কাটাবনিয়ার শওকত ও জাহাঙ্গীর, জিয়া, কামাল, ওমর, জাফর, কোয়াইনছড়ি পাড়ার জহির, সাবরাং মুন্ডার ডেইলের সাকের মাঝি, দানু, জাফরসহ সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া, হ্নীলার ২ রোহিঙ্গা বস্তি, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের শত শত দালাল মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত।

তবে অনেকের বিরুদ্ধে মানব পাচারের একাধিক মামলাও রয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে মাদক বিরোধী অভিযানের পাশাপাশি মানব পাচার বিরোধী অভিযান পরিচালনার দাবী সচেতনমহলের।

 

আরও খবর

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলেই পাহাড়ের কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়ন হবে- বীর বাহাদুর

বান্দরবানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সুরের মুর্ছনায় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের ২৫ বছর পূর্তি

টেকনাফ উপকূল দিয়ে মানব পাচার অব্যাহত

পর্যটন শিল্প ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরী- মেনন

 

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, পাচার, মানব পাচার
Facebook Comment

2 Replies to “টেকনাফ উপকূল দিয়ে কৌশলে মানব পাচার অব্যাহত: ধরা ছোঁয়ার বাইরে পাচারকারীরা”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন