চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে এক চাকমা নারীকে ধর্ষণ!

 

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের (সিএইচটিডিবি) চাকমা উপজাতি এক নারী কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করছে ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক উপ-সহকারী প্রকৌশলী। প্রথম পর্যায়ে লোকলজ্জা আর ভয়ে নিত্যদিন ধর্ষিত হয়েও ধর্ষণ প্রতিরোধ করতে পারছিলেন ছোট চাকরিটি চলে যাওয়ার ভয়ে।

বেকার স্বামী, ছেলেমেয়ের আহার ও পড়ালেখার খরচের দিকে তাকিয়ে নীরবেই কেঁদে যাচ্ছিলেন এই অসহায় নারী। কিন্তু নিত্যদিনকার ধর্ষণে অতিষ্ঠ হয়ে নিরবতা ভেঙে এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস-চেয়ারম্যানের নিকট প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন ধর্ষিতা। তবে ধর্ষিতার এই অভিযোগ পেয়েও কোন পদক্ষেপ নেননি প্রতিষ্ঠান ভাইস চেয়ারম্যান। আর এ সুযোগে ধর্ষক, বিচার চাওয়া ধর্ষিতার চরিত্রে কলঙ্কের দাগ লেপন করে  ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে যান।

ধর্ষিতা সিএইচটিডিবির ভাইস চেয়ারম্যানকে লিখিত অভিযোগে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির ছোট্ট একটি পদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিন অফিসে পৌঁছার আগেই দায়িত্ব পালনে ছুটে যেতে হয় তাকে। তিনতলা ভবনে অফিসের প্রতিটি কক্ষ ও ফ্লোর ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করেন এ সময়ে। আর এই সুযোগে কাজের বাহানায় অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকিট্রিক) মিহির কুমার চাকমা। এ সময় হাতে পাঁচশত টাকা গুঁজে দিয়ে কড়া ভাষায় জানিয়ে দেন, কাউকে বললে চাকরিচ্যুত করা হবে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বলে। এর পর থেকে প্রতি দু‘এক দিন পর পরই ধর্ষণ করা হয় তাকে।

দীর্ঘ দু‘বছর ধরেই চলতে থাকে ধর্ষণ। ধর্ষিতা পরে এক পর্যায়ে সাহায্য চান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অফিস তত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা অপর উপজাতি নারী উস্যাং মা চৌধুরীর নিকট। এ সময় উস্যাং মা চৌধুরী অভয় দিয়ে বলেন, লিখিত অভিযোগ দাও চেয়ারম্যানকে। তবেই বিহিত ব্যবস্থা একটা হবে। অভিযোগ দেয়ার প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু আইনানুগ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বোর্ড।  প্রতিকার নেয়া হয়নি।

সিএইচডিবি সূত্রে জানাগেছে, ধর্ষিত চাকমা উপজাতি এই নারী সিএইচটিডিবির চেয়ারম্যানকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর পরই বোর্ড চেয়ারম্যানের নিকট ফোন যায় মিয়ানমারের দায়িত্বে থাকা সাবেক এক রাষ্ট্রদূতের। আর ওই ফোনটি পাওয়ার পর থেমে যায় ধর্ষিত এই নারীর প্রার্থীত বিচার। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিএইচটিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক) মিহির কুমার চাকমা বলেন, এই বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না। যা জানার বোর্ড থেকে জানতে পারেন।

এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিএইচটিডিবির চেয়ারম্যান তরুণ কান্তি ঘোষ বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র: দৈনিক পূর্বতারা

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন