Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

চাকমা সার্কেল চীফের পত্নী ইয়েন ইয়েন পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে: পার্বত্য বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

চাকমা সার্কেল চীফের ২য় পত্নী ইয়েন ইয়েন পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ে দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো. জাহাঙ্গির আলম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার আহ্বায়ক বেগম নূর জাহান, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-সভাপতি মো. কামাল হোসেন, জেলা ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা নারগিস আক্তার, সহ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা জান্নাতুন নাঈম মুন্নি প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ করছি যে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্তময় করে তুলতে একটি মহল এখনও নানাভাবে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এ মহলটি সম্প্রতি রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার উপজাতি দুই কিশোরীকে ঘিরে কথিত নির্যাতনের ঘটনা সাজিয়ে হঠাৎ করে একটি বিষয়ের অবতারণা করে। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিন নানা নাটক ও বির্তক সৃষ্টি করে চলেছেন তথাকথিত চাকমা রানি ইয়েন ইয়েন। ইতোমধ্যেই নানা কারণে রাঙামাটি জেলায় বিতর্কিত চাকমা সার্কেল চীফ পত্নী ইয়েন ইয়েন কোনো অদৃশ্য শক্তির ইন্দনে পার্বত্য  চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে বিলাইছড়ির ইস্যুটি সামনে এনে তারা রাজনীতির নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি লিখিত বক্তব্যে বলে, “আমরা স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করতে চাই যে, চাকমা সার্কেল চীফ পত্নী ইয়েন ইয়েন বৈবাহিক সূত্রে রাঙামাটি আসার পর থেকেই নানা সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন। আমরা ভেবেছিলাম বয়স কম বিধায় তিনি এখনও তার নিজের গুরুত্ব বুঝতে পারেননি, সময়ের ব্যবধানে তার এ অভ্যাসে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু দিন দিন তিনি যে ভাবে তার অবস্থান ব্যবহার করে পাহাড়ের সাধারণ এবং সহজ সরল নারীদের উস্কে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাতে আমরা শঙ্কিত এবং বিতৃষ্ণ।”

“আমরা আরও জানাতে চাই যে, দুই কিশোরীর উপর কেউ যদি কোনো নির্যাতন চালিয়ে থাকে তার বিচার হওয়া উচিৎ, এতে কারও দ্বিমত থাকার কথা নয়। কিন্তু বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য রাজনৈতিক রং লাগানো বা কেউ সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে তাদের বরদাস্ত করা হবে না।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, “ইতোমধ্যে প্রায় সকলেই অবগত আছেন যে, ২৩ জানুয়ারি দুপুরে চিকিৎসার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয় বিলাইছড়ির দুই মারমা কিশোরী। তিনদিন চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ওই দুই কিশোরীর পিতা-মাতা তাদেরকে ২৬ জানুয়ারি (শুক্রবার) নিয়ে যেতে চাইলে শুক্রবার সকালে পাহাড়ের দুই বির্তকিত নারী নেত্রী হাসপাতালে গিয়ে ওই দুই কিশোরীকে দিয়ে তাদের ইচ্ছেমত স্টেটমেন্ট করিয়ে নেওয়ার জন্য ভিকটিমদের নিজেদের জিম্মায় নেওয়ার অপচেষ্টার চেষ্টা করে। রাঙামাটি জেনারেল হাসাপাতলের বিভিন্ন সূত্রে খবর নিয়ে আমরা জানতে পেরেছি মারমা দুই কিশোরী চিকিৎসা কার্যক্রম শেষ করে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পাদন করছিলেন ওই সময় হঠাৎ করেই  ইয়েন ইয়েন, মানবাধিকার কমিশনের বির্তকিত সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা, নারী নেত্রী এডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, নারীনেত্রী নেলী প্রু মারমা নেলীসহ পাহাড়ের সন্ত্রাসী আঞ্চলিক দল জেএসএসের ছাত্র সংগঠন পিসিপি’র নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেন ও জোর করে দুই মারমা কিশোরীকে নিজেদের জিম্মায় নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালায়। এ সময় দুই কিশোরীর পিতা-মাতা তাদের কন্যাকে নিজেদের জিম্মায় নেওয়ার কথা বলে এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করে। পরে সেখানে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে বিষয়টি বেআইনি বিধায় এ বিষয়ে বাঞ্চিতা চাকমা ও ইয়েন ইয়েনকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। এসময় তারা পুলিশের সাথে উদ্ধত এবং অশোভন আচরণ করতে থাকেন। পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিনয়ের সাথে জানান, দুই কিশোরীর আইন সম্মত অভিভাবক তথা তাদের পিতা-মাতা সেখানে উপস্থিত থাকায় তাদের অমতে কর্তৃপক্ষ অন্য কাউকে দুই কিশোরীর জিম্মাদারী প্রদান করতে পারেন না।”

“আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃঢ়তায় তারা সেদিন সেখান থেকে ফিরে এলেও, আমরা জানতে পেরেছি এখনও নানাভাবে ওই দুই কিশোরীকে তাদের আয়ত্তে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ঢাকার চিহ্নিত একটি ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহ করার চেষ্টা করছে।”

“ইয়েন ইয়েন কর্তৃক এ ধরনের বির্তকিত রাজনৈতিক আচরণে পার্বত্যবাসী আতঙ্কিত ও ক্ষুদ্ধ। নারীর সম্মান নিয়ে রাজনীতি করার এই ঘৃণ্য খেলা পাহাড়ের নারীদের স্বকীয়তা নষ্ট করছে। মূলত রাঙামাটিতে সচেতন নাগরিক সমাজের সন্ত্রাস বিরোধী মহা সমাবেশের আগে এই নাটক সৃষ্টির মাধ্যম সমাবেশের মূল ইস্যুটিকে নষ্ট করার চেষ্টা ও বর্তমানে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সুনাম দেশে ও আর্ন্তজাতিক ভাবে ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াস চালানোর জন্যই এই হীন চেষ্টায় লিপ্ত ইয়েন ইয়েন।”

“যেখানে মারমা দুই কিশোরীর পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন তাদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। সেখানে ইয়েন ইয়েন পাহাড়ের শান্ত পরিবেশ বাঙালি ও উপজাতিদের মধ্যে আস্থা ও সু সর্ম্পকের জায়গাটি নষ্ট করে পাহাড়কে অশান্ত করার বিশেষ মহলের এজেন্ডা ও পাহাড়ের সন্ত্রাসী সংগঠন গুলোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে একে অপরের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে বিশেষ স্বার্থ হাসিল করার উদ্দেশ্যে মারমা দুই কিশোরিকে দিয়ে জোর পূর্বক র্ধষণ নাটক সাজিয়েছে।”

“মেডিকেল রির্পোট প্রকাশ হওয়ার আগেই ও একদিন পরেই কিভাবে ইয়েন ইয়েন মিডিয়ায় সাক্ষাতকারে বলেন কিশোরী দু’জন র্ধষণ হয়েছেন। অন্যদিকে দুই কিশোরীর পিতা-মাতা জুমে যখন কাজ করছেন ঠিক তখনি দুই কিশোরীকে তাদের পরিবারের অজান্তে রাঙামাটিতে নিয়ে আসে বোটে করে পাহাড়ের সন্ত্রাসী সংগঠনের জেএসএসের উপজাতীয় কিছু যুবক এবং তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে নাটক সাজিয়ে পার্বত্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে একের পর এক বির্তকিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েন ইয়েন।”

“বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে মামলা হওয়ায় ও আসল ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে বার বার দুই কিশোরীকে নিজের জিম্মায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ইয়েন ইয়েন। তাদের জিম্মায় নিয়ে দুই কিশোরীকে দিয়ে জোর করে হয়ত স্টেটমেন্ট নিবে না হয় গুম করে আরেক কল্পনা নাটক সাজিয়ে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাবে ইয়েন ইয়েন। ইয়েন ইয়েন পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলোর প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবেই কাজ করছেন বলে অবস্থা দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে দেশবাসীর কাছে।”

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি প্রশ্ন তোলে, “এখন পার্বত্যবাসীর প্রশ্ন হলো পার্বত্য চট্রগ্রামে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ইউপিডিএফ খুন গুম অপহরণ  ব্যাপক চাঁদাবাজী ও র্ধষণ করলে সেই ব্যাপারে ইয়েন ইয়েনসহ মানবাধিকার কমিশনের রাঙামাটির সদস্য বাঞ্চিতা চাকমারা তখন কোন তৎপরতা দেখায় না বা কোন প্রতিবাদ করে না কেন?”

সংগঠনটি আরও প্রশ্ন তোলে বলে, “যখন পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কর্তৃক বিশাখা চাকমা, ইতি চাকমা, মুকুল চাকমা, সাদিকুল ইসলাম, রবিউল হোসেন, রতন, শান্ত, মোহনী ত্রিপুরা, বালাতি ত্রিপুরা, অরবিন্দু চাকমাসহ অসংখ্য নিরীহ পার্বত্যবাসীকে হত্যা করেছে ও কিছুদিন আগে রাঙামাটিতে উপজাতীয় মহিলা আওয়ামী লীগের নারী নেত্রী ঝর্ণা খীসার উপর পাহাড়ের বিচ্ছন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সন্ত্রাসীরা নির্মম ভাবে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছিলো তখন কথিত রানি ইয়েন ইয়েন ও মানবাধিকার কমিশনের বির্তকিত সদস্য বাঞ্চিতা চাকমারা কোথায় ছিলো? তখন কেনো তারা সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন গুলোর সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানাননি ও প্রতিবাদ করেননি কেন?”

“তাহলে কি ইয়েন ইয়েন বিচ্ছন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলোর পক্ষে কাজ করছেন ও দেশ বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন?

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি দাবি জানায়, অবিলম্বে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ইয়েন ইয়েনকে অভিযুক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক।

এই দাবিতে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) রাঙামাটিতে মানববন্ধন, ১৯ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে বলে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কর্মসূচি ঘোষণা করে। ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যদি ইয়েন ইয়েন সাম্প্রদায়িক ও বির্তকিত কর্মকাণ্ড বন্ধ না করে অথবা প্রশাসন তাকে আইনের আওতায় না আনে তাহলে পরবর্তীতে বিক্ষোভ হরতাল অবরোধসহ আরও বৃহত্তর কর্মসূচি প্রদানে বাধ্য হবে বলে জানায় সংগঠনটি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন