চকরিয়ায় প্রথমবারের মতো সিজারিয়ান অপারেশনে ছাগলের বাচ্চা প্রসব

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগে নতুন এক চমক সৃষ্টি করে দেখালেন ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফেরদৌসী আকতার।

তিনি ভেটেরিনারি হাসপাতালে এই প্রথম বারের মতো ছাগলের পেট থেকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থ একটি ছাগলছানা বের করে পুরো উপজেলা জুড়ে ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে অপারেশনকৃত মা ছাগল ও বাচ্চা উভয় সুস্থ রয়েছে। চকরিয়া উপজেলায় ছাগলের এটি প্রথম সিজারিয়ান বাচ্চা।

মঙ্গলবার রাত আটটা ২০মিনিটে সিজারিয়ান বাচ্চাটি হয়। এই সফল অস্ত্রোপচার সিজারিয়ান অপারেশনটি করেন প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফেরদৌসী আকতার দিপ্তীর নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক।

প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের গাবতলী বাজার মুসলিমনগর এলাকার ফালেছা বেগম একটি মা ছাগল নিয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি হাসপাতালে আসেন। এরপর হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফেরদৌসী আকতার ওই ছাগলটিকে বিভিন্ন পর্যবেক্ষন করে। পরে ছাগলটি সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।

উপজেলা ভেটেরিনারী হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসা মা ছাগলটির জরায়ুতে পানি ভাঙা শুরু হলেও বাচ্চা প্রসব হচ্ছিল না। এ কারণে ছাগল মালিক সেটিকে পশু হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ছাগলটি গর্ভের তিনমাস আগে গাড়ি এক্সিডেন্ট করে। এতে ছাগলটির পেলভিক গার্ডলে (শ্রণিচক্র) ক্ষতি হয়। এরফলে প্রসুতি অবস্থায় যতটুকু সম্প্রসারণ হওয়ার প্রয়োজন ছিল, ততটুকু সম্প্রসারণ হয়নি। এ কারণে ছাগলটির স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা ছিল না।

সফল সিজারিয়ান অপারেশন ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফেরদৌসী আকতার দিপ্তী বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক সাজিদ হাসান ও ইন্টার্ন ভেটেরিনারি ফিল্ড এ্যাসিসটেন্ট মো. বাবরকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম ছাগলটিকে সিজার করাতে হবে।অপ্রতুল যন্ত্রপাতি ও হাসপাতালের অনুপযুক্ত পরিবেশের পরও সিজার করা হয়েছে। প্রায় আড়াই ঘন্টা চেষ্টার পর এতে সফলতাও পাওয়া গেছে। দেশে অনেকেই জানেন না পশুরও সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা হয়। ছাগলটির মালিক ফালেছা বেগম বলেন, ছাগলেরও যে সিজারে বাচ্চা হয় এই প্রথম দেখলাম। এটা কখনোও শুনিনি। মা ছাগল ও বাচ্চা এখন পুরোপুরি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন