parbattanews

চকরিয়ায় অনিশ্চয়তার মুখে রেললাইন প্রকল্পের ৫২কিলোমিটার উন্নয়ন কাজ


চকরিয়া প্রতিনিধি:

দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেল লাইন প্রকল্পের আওতায় চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে চলমান উন্নয়ন কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিন্মি করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। ওই টাকা না দেয়ায় সর্বশেষ অভিযুক্ত চক্রটি রাতারাতি কলাগাছ রোপন করে চলাচলের পথ দখলে নিয়েছে। এ অবস্থার কারনে বর্তমানে থমকে গেছে রেল লাইন প্রকল্পের চলমান উন্নয়ন কাজ।

অপরদিকে চাঁদা দাবির এ ঘটনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন এন্ড কোম্পানী লিমিডেটের ব্যবস্থাপক মো.মেরাজ হোসেন বাদি হয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর চকরিয়া থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দিয়েছেন। এতে আসামি করা হয়েছে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়া এলাকার গোলাম কাদের, ফজলুর রহমান, শাহ আলম, শামসুল আলম, আবদুল মান্নান, আবদুল মালেকসহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে।

চকরিয়া থানায় দাখিল করা এজাহারে বাদি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন এন্ড কোম্পানী লিমিডেটের ব্যবস্থাপক মো.মেরাজ হোসেন দাবি করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের অধীনে তাদের প্রতিষ্ঠানটি দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেল লাইন প্রকল্পের আওতায় ৫২ কিলোমিটার নির্মাণ কাজের নিয়োজিত ঠিকাদার। তারা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপনে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন।

কাজের শুরুতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ সামগ্রী ও মালামাল মজুদ করার জন্য উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে বিএস ১৭৬ নম্বর খতিয়ান থেকে সৃজিত বিএস ৩৬১১ নম্বর খতিয়ানের বিএস ২৬২৩ ও ২৬২৮ দাগের মালিক জগুনা বেগম থেকে রেজিষ্ট্রিমুলে ২৫ শতক জায়গা ক্রয় করেন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মেরাজ হোসেন বলেন, ক্রয়কৃত উল্লেখিত জায়গার মধ্যে বর্তমানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে রয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ৫২ শতক জমি। এ জমির বিপরীতে ইতোমধ্যে চকরিয়া উপজেলা ভুমি অফিসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.আতাউর রহমান ভুইঁয়ার নামে নামজারী জমাভাগ খতিয়ানও সৃজিত হয়েছে। তবে এখনো জগুনা বেগম থেকে ক্রয়কৃত জমির মধ্যে ১৩ দশমিক ৪৮ শতক জমি আমাদের দখলে নেই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অনুকুলে থাকা ১১ দশমিক ৫২ শতক জমিতে ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ সামগ্রী ও মালামাল মজুদ করতে ডিপো নির্মাণ এবং মালামাল পরিবহনে যানবাহন চলাচলে সড়ক তৈরী করা হয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মেরাজ হোসেন অভিযোগ করে বলেছেন, জগুনা বেগম থেকে জমি ক্রয়ের সময় কোন ওয়ারিশ না থাকলেও কিছুদিন ধরে স্থানীয় একটি মহল ওয়ারিশ পরিচয় দিয়ে আমাদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তাদের কথামতো টাকা না দেয়ায় সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে অভিযুক্তরা দলবদ্ধ হয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালামাল পরিবহনে যানবাহন চলাচলের তৈরীকৃত সড়কটি দখলে নিয়ে রাতারাতি কলাগাছ রোপন করে দিয়েছে। একই সাথে চলাচলের সড়কে বসতিও নির্মাণ করেছে অভিযুক্তরা। এ অবস্থার কারনে বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে রেল লাইন প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ।

চাঁদা দাবির এ ঘটনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো.মেরাজ হোসেন বাদি হয়ে দায়ের করা অভিযোগটি চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী তদন্তের জন্য এসআই মো.আলমগীর আলমকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

জানতে চাইলে চকরিয়া থানার এসআই মো.আলমগীর আলম বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাটি তদন্তে কাজ শুরু করি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিবাদিপক্ষ ও স্থানীয় জনগনের সাথে কথা বলতে জানতে পারি উল্লেখিত জায়গার ব্যাপারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আদেশ রয়েছে। সে কারনে তদন্তের বিষয়টি আপাদত স্থগিত রাখা হয়েছে।

Exit mobile version