চকরিয়ার মালুমঘাট হাসপাতালে বোমা ও গুলিতে আহত ১৮ রোহিঙ্গা চিকিৎসাধীন
চকরিয়া প্রতিনিধি:
মিয়ানমারের সেনা, পুলিশ, সীমান্তরক্ষীসহ উগ্র বৌদ্ধদের হাতে ১৮ জন আক্রান্ত রোহিঙ্গা মুসলিম এখন কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
তাদের মধ্যে ৪ শিশু, ১ বয়স্ক মহিলা ও ১৩ যুবক রয়েছে। সূত্র মতে, গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মিয়ানমারের বুচিদং, মন্ডু ও কিয়াংদং, বলি বাজার, সাহেব বাজার এলাকায় বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ করে এলাকার লোকজনকে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে হত্যা করছিল।
চোখের সামনে অনেকে চটপট করে মৃত্যুর যন্ত্রণা দেখে প্রাণভয়ে পালাতে গিয়ে আজিজুল হক (১৫), মোহাম্মদ ইউছুপ (৩৫), জুবাইর (৩৩), আইয়ুব (১৬), জুবাইর (৪০), রিদুয়ান (২২), মোঃ ওহাব (৩০), কামাল (৪০), হাবিবুল্লাহ (২২), মোঃ সোহাইব (৮), আব্দুন্নবী (২৫), মাহমুদুল হাসান (২৬), ছাবেকুন্নাহার (৫৫), কাউছার বিবি (৪), মিনারা বেগম (৮), তাছনিম আরা (১০), জোহরা (৫) গুলিবিদ্ধ ও বোমায় অনেকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়।
এতে ২টি পা হারিয়েছে ছাবেকুন্নাহার (৫৫) ও ১টি পা হারিয়েছে কাউছার বিবি (৪), ১টি হাত হারিয়েছে জোহরা (৫)। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাদেরকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুনধুম ও উখিয়া সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।
পরে তাদেরকে স্থানীয় লোকজন মালুমঘাট হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। আহতদের পরিচর্যাকারী ইসমাঈল নামক মিয়ানমারের এক নাগরিক দাবী করেছেন, একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় তারা মালুমঘাট হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার ১ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে শয্যায় কাতরানো মিয়ানমারের আহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেখে মনে হয়েছে তারা সুস্থ হয়ে উঠতে বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তবে সুস্থ হলেও অধিকাংশই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করবে।
বোমায় ঝলসে যাওয়া মোহাম্মদ জুবাইর দাবী করেছেন, বর্মী বাহিনী প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা মুসলমানদের পাড়ায় পাড়ায় অভিযান চালিয়ে যুবকদের হত্যা ও যুবতীদের ধর্ষণের পর হত্যা করছে। আর বাড়িতে অগ্নি সংযোগের পূর্বে পরিত্যক্ত বাড়ির মালামাল লুট করছে বৌদ্ধ যুবকেরা।
এসব আহত রোহিঙ্গারা তাদের সহায়-সম্পদ গরু-ছাগল রেখে প্রাণভয়ে এপারে চলে আসলেও তাদের পরিবারের অপরাপর সদস্যদের কোন সন্ধান এখনও পর্যন্ত তারা পায়নি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও আহতরা চরম আতঙ্কে রয়েছে।