আসামী সম্পর্কে প্রশ্ন করায় গুইমারায় সাংবাদিকদের সাথে পুলিশের অশালীন আচরণ

গুইমারা প্রতিনিধি:

গুইমারায় রামছু বাজার থেকে পুলিশের হ্যান্ডকাপ নিয়ে পলাতক ক্যাউজ প্রু মারমার ব্যাপারে নিউজ করার প্রয়োজনে তার কথা পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসা করায় সাংবাদিকদের সাথে অশালীন আচরণ করেছে থানার এ এস আই ফারুক।

শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে গুইমারা উপজেলার রামচু বাজার এলাকায় এএসআই ফারুকের নিকট জানতে চাইলে সে সঠিক তথ্য না দিয়ে অশালীন আচরণ করে বলেন, পুলিশ ডিবির পরিচয়ে হোক, যেই পরিচয়ে হোক, লোক ধরবে ছাড়বে সমস্যা কোথায়?

(প্রকাশ যোগ্য নয়) খারাপ মন্তব্য করে বলেন, … সাংবাদিকদের নিউজে .. হবে। তার এ আচরণে গুইমারার সাংবাদিক সমাজ অপমানিত । রামছু বাজার থেকে হ্যান্ডকাপ নিয়ে পলাতক ক্যাউজ প্রু মারমা নিকট থেকে জানা যায়, শনিবার গুইমারা হাটবার হিসেবে বাজারে সারাদিন মাছ বিক্রি করে বাড়িতে ফেরার সময়ে ক্যাউজপ্রু মারমা ও তার বড় ভাই রামছু বাজার আবু ডাক্তারের দোকান থেকে ঔষধ কেনার জন্য যায়। এসময়ে সাদা পোশাকে থাকা গুইমারা থানার ডিউটি অফিসার এএস আই ফারুকের নেতৃত্বে হঠাৎ ক্যাউজপ্রু মারমাকে দাগী আসামির মত হাত ধরে হ্যান্ডকাপ পরান এ এস আই ফারুক।

এতে উপস্থিত ঔষধ দোকানে থাকা লোকজন ও গ্রামবাসীরা সাদা পোশাকের কারণে চিনতে না পেরে পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং চারিদিক থেকে ঘিরে এলাকাবাসী পরিচয় জানতে চায়।। প্রশ্নের জবাবে এ এস আই ফারুক নিজেকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দেন বলে স্থানীয় চেয়ারম্যান সূত্রে জানা যায়। তখন স্থানীয়রা বলেন, শীলং এর মূল হোতাদের না ধরে সাধারণ লোকদের ধরছেন কেনো? এমন সময় স্থানীয়দের সাথে কথা কাটাকাটির ফাঁকে হ্যান্ডক্যাপসহ পুলিশের হাত থেকে ক্যাউজপ্রু মারমা পালিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুইমারা থানার এ এস আই মো. ফারুকের নেতৃত্বে চার সদস্যের পুলিশের একটি দল সাদা পোশাকে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রামচু বাজার এলাকায় অভিযানে যান।

স্থানীয় এক গ্রামবাসী জানান, ইনিফর্ম না থাকায় সাদা পোশাকের পুলিশকে প্রথমে লোকজন দুষ্কৃতিকারী ভেবে ঘেরাও করে ফেলে। পরে তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিলে গ্রামবাসী শান্ত হন। পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়া ক্যাউজপ্রু মারমা পেশায় যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল চালক ও গুইমারা বাজারে সাপ্তাহিক হাটের দিন মাছ বিক্রি করে। তিনি গুইমারার বটতলী ডিবি পাড়ার রাংলাঅং মারমার ছেলে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হাফছড়ি ইউপির মহিলা মেম্বার হ্লামাপ্রু মারমা বলেন, পুলিশ হ্যান্ডক্যাপটি যেভাবেই হোক উদ্ধার করে দিতে বললে আমি ক্যাউজপ্রু মারমাকে ফোনে বলি। তখন সে ছোট একটা ছেলেকে দিয়ে আবু ডাক্তারের দোকানে সে হ্যান্ডকাপটি পাঠালে থানায় হস্তান্তর করি।

মহিলা সদস্যা আরও বলেন, পুলিশের হাত থেকে পালানো ক্যাউজপ্রুর বড় ভাইকে ছেড়ে দিতে তারা থানার ওসিকে অনুরোধ করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী বলেন, সাদা পোশাকে ডিবির পরিচয় দিয়ে ডাক্তার দোকান থেকে জুয়া খেলার দায়ে লোকজনকে ধরে হয়রানি করা হচ্ছে। আবার যাকে ধরেছে সে পালিয়ে গেছে। এজন্য তার নিরাপরাধ বড় ভাইকে ধরে নিয়ে আসবে এটা কেমন তার বোধগম্য হচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, আমি ওসিকে অনুরোধ করেছি ছেলেটা ভালো তাকে অহেতুক ধরে আনা হয়েছে। এবিষয় নিয়ে এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনা হচ্ছে এর পরও তাকে সন্দেহাতীকভাবে চালান দেয়।

গুইমারা উপজেলা চেয়ারম্যান উশ্যেপ্রু মারমা জানান, তিনিও ঘটনাটি শুনেছেন।

থানার ওসি মো. গিয়াস উদ্দিন হ্যান্ডক্যাপ নিয়ে যুবকের পালানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি পালিয়ে যাওয়া ক্যাউজপ্রুর বড় ভাইকে আটকের কথা স্বীকার করেন। এবং সন্দেহাতীতভাবে ৫৪ ধারায় তাকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করার কথা স্বীকার করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন