খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল হত্যাকাণ্ডে নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মইস্যা কাশেম গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল হত্যাকাণ্ডে নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী আবুল কাশেম প্রকাশ মইস্যা কাশেম গ্রেফতার হয়েছে।

সোমবার(২৬মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা শহরের শালবাগানের শাপলা চত্বর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে ছাত্রলীগ রাসেল হত্যাকাণ্ডে তিন আসামি গ্রেফতার হলো

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন টিটু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আবুল কাশেম ওরফে মইস্যা কাশেম মামলার ৪ নম্বর এজাহারভূক্ত আসামি। সে রাসেল হত্যাকাণ্ডে নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম। আবুল কাশেম  আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম পিসি হত্যাকাণ্ডেরও চার্জশীটভূক্ত আসামি। এছাড়াও সে ২০১০ সালে খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় সান্ধ্য আইন ভঙ্গের অভিযোগে চার্জশীটভূক্ত আসামি। সে বন আইনসহ কয়েকটি মামলারও আসামি।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন টিটু আরও জানান, ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল হত্যাকাণ্ডে সকল আসামিকে সনাক্ত করা হয়েছে এবং হত্যাকারীদের আটক করতে পুলিশ মাঠে রয়েছে। গ্রেফতারকৃত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি শহরের মিলনপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা ছাত্রলীগ কর্মী রাসেলকে কুপিয়ে আহত করে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টা জেলার মানিকছড়ি এলাকায় সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এ ঘটনায় নিহত রাসেলের মা খোদেজা বেগম  রবিবার  রাতে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম ও জেলা আওয়ামী লীগে শিক্ষা ও মানব  সম্পাদক দিদারুল আলমসহ প্রতিপক্ষের ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অন্তত ১০/১৫ অজ্ঞাত নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে।

শুরু থেকেই খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি’র অনুসারীরা ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল হত্যাকাণ্ডের জন্য পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের অনুসারীদের দায়ী করেছে।

রবিবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো খাগড়াছড়ি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে রাসেল হত্যাকাণ্ডের জন্য পৌরসভার মেয়র ও তার সহযোগীদের দায়ী করে  হত্যাকারীদের আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী দেওয়া হয়।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত পৌরসভা নির্বাচনের পর থেকে মেয়র রফিকুল আলমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলায় আওয়ামী লীগের ২৬ নেতাকর্মী পঙ্গু ও দুই হাজার নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। সমাবেশের চলাকালে আদালত সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

উল্লেখ, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীল প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি আওয়ামী লীগে বিভক্তি দেখা দেয়। সে থেকে দুই পক্ষের মধ্যে প্রতিনিয়ত হামলা, মামলা ও সংঘর্ষ লেগেই ছিল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন