Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

কাঠমাণ্ডুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী সেমিনার অনুষ্ঠিত


পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে গত ২৭ ও ২৮ মার্চ নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে অনুষ্ঠিত হলো এক আন্তর্জাতিক সেমিনার। কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে বাংলাদেশ, নেপাল ও ফিলিপাইনের মোট ১৫ জন অংশ নেয়। কাঠমাণ্ডুর তেওয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই সেমিনার এতোটাই কঠোর গোপনীয়তার সাথে অনুষ্ঠিত হয় যে অংশগ্রহণকারীর বাইরে তেওয়া সেন্টারের দুয়েকজন খুবই বিশ্বস্ত কর্মকর্তা ছাড়া এই অনুষ্ঠানে অন্য কারো প্রবেশাধিকার ছিলো না। তেওয়া সেন্টার নারীর প্রতি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র এবং নারী অধিকার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অার্থিক ও সাংগঠনিকভাবে সহায়তা করে থাকে।

এই সেমিনার নিয়ে গত ২৬ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। আবুল খায়ের লিখিত ঐ রিপোর্টে বলা হয়, ‍‌‌“এই ওয়ার্কশপটি ভারতে করার চেষ্টা হলেও তা ভেস্তে যায়। শেষ পর্যন্ত নেপালে বাংলাদেশবিরোধী এই ওয়ার্কশপটি হতে যাচ্ছে। এই ওয়ার্কশপের নেপথ্য নায়ক পার্বত্য অঞ্চলের স্বাধীনতাবিরোধীদের একটি অংশ। বিষয়টি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য অঞ্চলের একটি পরিবারের কর্মকাণ্ড ছিল সন্দেহাতীতভাবে স্বাধীনতা ও রাষ্ট্র বিরোধী। তত্কালীন ওই পরিবারের একজন আত্মস্বীকৃত রাজাকার ছিলেন। যার পুত্র বর্তমান ওই এলাকার কর্ণধার। এই রাজাকারপুত্র প্রতিনিয়ত তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।— সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই ওই ব্যক্তি এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। এরই অংশ হিসেবে তার পরিকল্পনায় সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের বিলাইছড়িতে তুচ্ছ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দুইজন মারমা মেয়েকে ধর্ষণ ও তথাকথিত রাণীর উপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ভিত্তিহীন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

পার্বত্য অঞ্চলের ওই ব্যক্তি ও তার স্ত্রী উক্ত দুটি ঘটনাকে পুঁজি করে নিরাপত্তা বাহিনী ও বাংলাদেশ সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করতে নেপালের কাঠমান্ডুতে ২৭-২৮ মার্চ দুই দিনব্যাপী একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছেন। ওয়ার্কশপে তারা আদিবাসী ইস্যু ও মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানান। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মাইকেল ভ্যান ওয়াট, লোরা জি এলিক্স, টম এসকিল্ডসেন, ইডা নিকোসাইলেন ও লোলা জেমি।

উক্ত ওয়ার্কশপে আমন্ত্রিত বাংলাদেশি কথিত বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের কিছু সদস্য রয়েছেন। এছাড়া বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিওকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সকল সংগঠন সব সময় এদেশের সরকারবিরোধী প্রতারণায় জড়িত এবং তুচ্ছ ঘটনাকে বিশাল আকারে বহিঃবিশ্বে প্রকাশ করে আসছে। এর বিনিময়ে তারা মোটা অঙ্কের টাকা অনুদান পেয়ে থাকে। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে এ তথ্যও বেরিয়ে এসেছে।”

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, বাংলাদেশের ঐ বিতর্কিত ব্যক্তির ফাউন্ডেশন ও ফিলিপাইনের তেবতেব্বা ফাউন্ডেশন এই সেমিনারের আয়োজন করেছিল। তেবতেব্বা ফাউন্ডেশন আদিবাসীদের শিক্ষা, গবেষণা, কৌশল ও নীতি নির্ধারণ, তথ্য সংগ্রহ, সরবরাহসহ সকল ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে। লয়ার্স এসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস অভ নেপালিজ ইন্ডিজেনাস পিপলস(এলএএইচইউআরআইপি) এই সেমিনারের স্থানীয় আয়োজক ছিলো। সেমিনারের আলোচ্য বিষয় ছিলো, ‍;; “কনসেপ্ট নোট অন ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ওয়ার্কসপ ফর সাপোর্টিং দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অভ সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোলস ইন বাংলাদেশ উইথ আ পার্টিকুলার ফোকাস অন সিএইচটি কনটেক্সট”

বাংলাদেশ থেকে চাকমা সার্কেল চিফের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি টিম এই সেমিনারে অংশ নেয়। এর মধ্যে ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, চাকমা সার্কেল চিফের স্ত্রী য়েন য়েন, তার পুত্র, ড. স্বপন আদনান, নিরুপা দেওয়ান, মাধবী মারমা, ডি খীসা, এমবি ত্রিপুরা, ঊষা এ চাক ও মৃণাল কান্তি ত্রিপুরা।

সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০৭১ ফ্লাইটে ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট দিয়ে নেপালে যায় এবং বিজি ০৭২ ফ্লাইট দিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে নেপাল ত্যাগ করে।

সেমিনারটি পর্যবেক্ষণকারী একটি সংস্থা এ মর্মে প্রশ্ন তুলেছে যে, এটি কোনো আন্তর্জাতিক সেমিনার ছিলো না। আলোচকদের শতকরা ৯০% বাংলাদেশী, আলোচ্য বিষয়ও বাংলাদেশী। কাজেই এ ধরণের সেমিনার পার্বত্য চট্টগ্রামে বা বাংলাদেশে না হয়ে বিপুল পরিমাণ লোকদের জন্য বিমান ভাড়া, হোটেল ভাড়া, খাওয়া দাওয়া ইত্যাদি খরচ করে নেপালে আয়োজনের উদ্দেশ্য কি? সংস্থাটি মনে করে এই আয়োজনের উদ্দেশ্যই ছিলো পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশ বিরোধী নানা ষড়যন্ত্র। সেকারণেই সেমিনারটি বাংলাদেশে আয়োজন না করে নেপালে আয়োজন করা হয়েছে। এমনকি নেপালেও কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়।

সংস্থাটি আরো মনে করে, আগামী এপ্রিল মাসে জাতিসংঘে আদিবাসী বিষয়ক পার্মানেন্ট ফোরামের আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এই সেমিনারে চাকমা সার্কেল চিফ প্রতিবছর অংশগ্রহণ করে থাকে। তার আগে এই আয়োজনের মধ্যে কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে। তাদের মতে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থে আঘাত হানে এমন বিষয়ে সরকারের উচিত সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া।

এদিকে চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় গত ২৭ মার্চ তারিখে তার অফিসিয়াল প্যাডে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত নিউজের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রতিবাদ পত্রে তিনি উক্ত সেমিনারে অংশ গ্রহণের কথা স্বীকার করে বলেছেন, “ঢাকার দৈনিক ইত্তেফাক প্রত্রিকার ২৬ মার্চ তারিখের ইস্যুতে নেপালে অনুষ্ঠিতব্য কর্মশালার উদ্দেশ্য বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে এবং একই বিষয়ে সোশাল মিডিয়াতে ২৬ ও ২৭ মার্চ প্রকাশিত বানোয়াট খবরের আমি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

এতে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণসহ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগসমূহ আনা হয়েছে সেগুলো অসত্য, বানোয়াট, মানহানিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এবং আমার নামে কুপ্রচারণার ও মানহানির ব্যর্থ প্রচেষ্টা মাত্র, যা বেআইনি ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধের মধ্যে পড়ে।

আজ ২৭ মার্চ নেপালে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছি আগামীকালও অংশগ্রহণ করবো। এতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণবাস্তবায়নসহ এ অঞ্চলের সামাজিক স্থিতিশীলতা আনায়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা তথা সমগ্র দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের বিষয় আলোচিত হয় এবং আগামীকালও হবে।

অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আগামীকাল এ সভাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও অন্যান্য নীতিমালা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জলবায় পরিবর্তন মোকাবেলা নিয়ে আলোচনা হবে। এ ধরনের কুপ্রচারণা ঠেকানোর জন্য আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করি।”

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন