এবার পাহাড়ীরাও বিরোধিতা করলো ভূমি কমিশন আইন সংশোধনীর
পার্বত্য নিউজ রিপোর্ট :
শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও উপজাতীয়দের দাবীর ভিত্তিতে পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন ২০০১ সংশোধন করা হচ্ছে বলে বর্তমান সরকার দাবী করলেও বাস্তবে পাহাড়ীরাও এই সংশোধনীর বিরোধিতা করছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে সরকার কাকে খুশী করতে এই সংশোধনী পাশ করছে? যার হাতে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সেই জেএসএস নেতা সন্তু লারমা গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, এই সংশোধনী পাহাড়ে নতুন সঙ্কট সৃষ্টি করবে। অন্যদিকে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন বর্তমান রূপে সংসদে পাশের বিরুদ্ধে রাঙ্গামাটি শহরে র্যালী ও মানববন্ধন করেছে পাহাড়িদের দুইটি সংগঠন।
আজ বেলা এগারটায় এই দাবিতে শহরের শিল্পকলা একাডেমি থেকে একটি র্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়। পরে তারা এই স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভুমি সংরক্ষণ আন্দোলন এবং সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সংগঠন দুটির নেতা গৌতম দেওয়ান, শক্তিপদ ত্রিপুরা, শান্তি বিজয় চাকমা, সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিরূপা দেওয়ান। পরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ৬দফা দাবি সম্বলিত স্বারকলিপি প্রদান করেন পাহাড়ি শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে প্রদত্ত ছয় দফা দাবি গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন করা, প্রস্তাবিত বন আইন সংশোধনী বিল স্থগিত করা, বনায়নের নামে ভূমি অধিগ্রহণ বন্ধ করা, ঐতিহ্যবাহি ও প্রথাগত সংরক্ষিত বনের আইনী স্বীকৃতি কার্যকর করা, সামাজিক বনায়ন বন্ধ করা, ও উপজাতীয়দের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা।
পরে একই দাবিতে স্থানীয় রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সন্মেলনের অয়োজন করা হয়। সংবাদ সন্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভুমি অধিকার সংরক্ষন আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও হেডম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সন্মেলনে নেতৃবন্দ বলেন প্রস্তাবিত বন আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকেরা চিরায়িত ভূমি থেকে উচ্ছেদ হবে এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রথা,বিশ্বাস, কৃষ্টি ও জীবন-জীবকার মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়বে।
অপরদিকে তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পক্তি কমিশন আইন- ২০১৩ সংশোধিত বিলটি সংসদে উপস্থাপনের পূর্বে সরকার পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের কোন প্রকার মতামত নেয়া হয়নি। তাই সরকারকে অবিলম্বে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ ও আন্তঃমন্ত্রনালয় বৈঠকের সুপারিশ অনুসারে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন- ২০০১ সংশোধনী আনতে হবে।