আসিয়ান সম্মেলনের খসড়া ঘোষণায় উল্লেখ নেই রোহিঙ্গা সংকট

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলো নিয়ে গঠিত আসিয়ান সম্মেলনের প্রস্তাবিত খসড়া ঘোষণায় মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান রোহিঙ্গা সংকটের কথা উল্লেখ করা হয়নি। সম্মেলন শেষে এই আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা পাঠ করা হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স খসড়া ঘোষণাটি পর্যালোচনা করে এ খবর জানিয়েছে।

সোমবার খসড়াটি পর্যালোচনা করে রয়টার্স। ঘোষণার একটি অনুচ্ছেদে ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনে মানবিক সহযোগিতার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে রাখাইনে ‘আক্রান্ত সম্প্রদায়’কে মানবিক সহযোগিতার কথা শুধু উল্লেখ করা হয়েছে। এতে রাখাইনে চলমান সামরিক অভিযানের মুখে ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বাংলাদেশে পালিয়ে আসার বিষয়ে কোনও বক্তব্য নেই।

খসড়া বক্তব্যটি প্রস্তুত করেছে আয়োজক দেশ ফিলিপাইন। দশ রাষ্ট্রের এই জোটের সভাপতিত্ব এখন ফিলিপাইনের। এই জোটের সদস্য মিয়ানমার। সোমবার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা প্লেনারি অধিবেশনে ম্যানিলায় মিলিত হন।

রয়টার্স জানিয়েছে, খসড়ায় রাখাইনের পরিস্থিতির কোনও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি এবং রোহিঙ্গা শব্দও ব্যবহার করা হয়নি। মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি বিদেশি নেতাদের রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

চলমান রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে আসিয়ান সদস্য মালয়েশিয়া উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল। তবে আসিয়ানের নীতি সদস্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন বিষয়ে কথা না বলার কারণে বিষয়টি সম্মেলনের আলোচ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বক্তব্য থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় রোহিঙ্গা ইস্যু না থাকায়।

রবিবার ম্যানিলা পৌঁছার পর দেওয়া ভাষণে চলমান সংকট নিয়ে কোনও কথা বলেননি। ১৯৯৯ সালে তিনিই আসিয়ানের হস্তক্ষেপ না করার নীতির সমালোচনা করেছিলেন। ওই সময় সু চি মিয়ানমারের সামরিক জান্তাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছিলেন।

ফিলিপাইনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্তো রোমুলো জানান, আসিয়ান সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কোনও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ফিলিপাইন প্রতিনিধি উইলনর পাপা জানান, আসিয়ান নেতারা সন্ত্রাসবাদ এবং শান্তি ও শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করবেন। কিন্তু তারা অনেক বড় ইস্যু নিয়ে কথা না বলে এড়িয়ে যাবেন।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার পর সামরিক অভিযান জোরদার করে মিয়ানমার। এ অভিযানের পর ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগ এনেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, রোহিঙ্গারা মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হচ্ছে বলে দাবি করেছে। মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন