Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

আমি দেখলাম আমার বাচ্চা ডুবে যাচ্ছে’

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

‘আমরা যে নৌকায় ছিলাম সেটি সাগর পাড় থেকে একটু দূরে ছিল। খুব জোরে জোরে তুফান আসছিল। তুফানে আমরা নৌকা থেকে ছিটকে যাচ্ছিলাম। আমার ৯ মাসের বাচ্চা আমার কোলে ছিল। আমরা নৌকা থেকে পড়ে যাই। আমি এক হাতে আমার সন্তানকে আরেক হাতে নৌকা ধরে রাখি। তুফান আমাদের আঘাত করতে থাকে। তুফানের পানিতে আমার সন্তানের দম আটকে যেতে থাকে। আমি দেখলাম সে মারা যাচ্ছে।’

নুর ফাতিমা। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত হয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশে আসতে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার সময় নিজের হাত দিয়ে ৯ মাসের শিশুসন্তানকে ধরে রেখেও বাঁচাতে পারেননি তিনি। সন্তানের লাশের ওপর হাত রেখে কান্না আর আহাজারি করছিলেন তিনি। ফাতিমাকে নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আল জাজিরা।

ওই প্রতিবেদনে ফাতিমা বলেন, ‘আমরা চারবার পানির নিচে ডুবে যাই। আমি দেখলাম আমার শিশুপুত্র সাইফুল রহমানের মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। কিন্তু কিছুই করতে পারছিলাম না। আমি তাকে হাত দিয়ে ধরে রাখা অবস্থায় সে মারা যায়।’

গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ইনানী বিচের কাছে রোহিঙ্গাবাহী একটি নৌকা ডুবে যায়। ফাতিমারা ছিল ওই নৌকার যাত্রী।

নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ৬০ জন রোহিঙ্গা মারা যায়। যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিল নারী ও শিশু। নিহতদের মধ্যে একজন ফাতিমার ৯ মাসের সন্তান।

ওই ট্রলারডুবির ঘটনায় মাত্র ১৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

ফাতিমা নিজের শিশুসন্তান ছাড়াও পরিবারের আরও ৪ সদস্যকে হারিয়েছে। স্বামী, তিন বছরের অপর এক সন্তান আর এক দেবর ছাড়া তার কেউ বেঁচে নেই।

ফাতিমার দেবর সালাম বলেন, আমি ক্লান্ত ছিলাম। একটু ঘুম এসেছিল। এর মধ্যে চিৎকারে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আমার স্ত্রী ও সন্তান ডুবে যাচ্ছিল। আমি তাদের ধরে রাখছিলাম। কিন্তু পারিনি।

সালমান বলেন, আমার দুই বছরের আরেক সন্তান ডুবে যাচ্ছিল। আমি তাকেও ধরে রাখার চেষ্টা করছিলাম। সে ৬ বার পানির নিচে ডুবে যায়। কিন্তু আমি তাকে ধরে রাখি। সে বাবা বাবা বলে চিৎকার করছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেও মারা যায়।’

ফাতিমা বলেন, আমরা সবকিছু হারিয়েছি। আমরা পরিবারের সদস্যদের, বাড়ি, প্রতিবেশী সব হারিয়েছি। বিশ্ববাসীর কাছে আমরা বিচার চাই।

 

সূত্র: যুগান্তর

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন